আপনি পড়ছেন

রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাত অবসানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ২০ দফার একটি শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। এই পরিকল্পনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদান এবং ন্যাটোর ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের আদলে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ভলোদিমির জেলেনস্কি

কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি জানান, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং আঞ্চলিক ব্যবস্থার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে চায়। বুধবার সংবাদ সম্মেলনের পর ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইউক্রিনফর্ম জেলেনস্কির উল্লেখ করা ২০টি দফা প্রকাশ করে।

কিয়েভের সার্বভৌমত্ব এবং রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে অনাক্রমণ চুক্তির বিষয়টি এই প্রস্তাবের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘নথিটি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ এবং শর্তহীন অনাক্রমণ চুক্তি গঠন করে। দীর্ঘমেয়াদি শান্তি বজায় রাখতে যোগাযোগের লাইনগুলো তদারকি করার জন্য একটি মনিটরিং ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। এতে মহাকাশভিত্তিক মনুষ্যবিহীন নজরদারি, লঙ্ঘনের আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থা এবং সংঘাত সমাধানের পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে।’

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ইউক্রেন ৮ লাখ সদস্যের একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী বজায় রাখবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং মিত্র রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে ন্যাটোর ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের মতো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পাবে দেশটি। এর বিপরীতে রাশিয়া ইউরোপের প্রতি অনাক্রমণ বজায় রাখার বিষয়ে আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দেবে।

পরিকল্পনায় ইউক্রেনের ইইউ সদস্যপদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ৮০০ বিলিয়ন (৮০ হাজার কোটি) ডলারের একটি পুনরুদ্ধার তহবিলের কথাও ভাবা হচ্ছে। সংস্থাটি জানায়, ‘অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের পুনর্গঠন এবং মানবিক প্রয়োজন মেটাতে বেশ কয়েকটি তহবিল গঠন করা হবে। ইক্যুইটি, অনুদান, ঋণের দলিল এবং বেসরকারি খাতের অবদানের মাধ্যমে ৮০০ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করাই এর লক্ষ্য।’

আঞ্চলিক ব্যবস্থাগুলো এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তবে বর্তমান ফ্রন্টলাইন বা সম্মুখসারির অবস্থান মেনে নেওয়া অথবা দনবাসে একটি নিরস্ত্রীকৃত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মতো বিকল্পগুলো বিবেচনায় রয়েছে। এগুলো ইউক্রেনের গণভোটের ওপর নির্ভরশীল।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ‘ইউক্রেন তার সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যাহারের বিরোধিতা করে। তবে যদি এই বিকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়, তবে উভয় পক্ষকেই অর্থাৎ রুশ বাহিনীকেও সমভাবে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই বিকল্পটি গ্রহণ করা ইউক্রেনে দেশব্যাপী গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদনের সাপেক্ষে হবে।’

আঞ্চলিক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জাতীয় নেতাদের পর্যায়ে নেওয়া হতে পারে। একবার ভবিষ্যৎ আঞ্চলিক ব্যবস্থা একমত হলে, রাশিয়া বা ইউক্রেন কেউ আর জোর করে তা পরিবর্তন করবে না। জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (এনপিপি) ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া যৌথভাবে পরিচালনা করবে।

ইউক্রেন পারমাণবিক অস্ত্রহীন রাষ্ট্র হিসেবেই থাকবে। চুক্তি পরবর্তী নির্বাচন দ্রুত অনুষ্ঠিত হবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একটি পিস কাউন্সিল বা শান্তি পরিষদ তদারকি করবে। নির্বাচনের সময় সামরিক আইন বাতিল করা হবে না।

এই পরিকল্পনায় রাশিয়াকে দিনিপ্রো নদী এবং কৃষ্ণ সাগর বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারে বাধা না দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, ‘নেভিগেশন বা নৌ চলাচলের স্বাধীনতা এবং পরিবহন কভার করে একটি পৃথক সামুদ্রিক ও প্রবেশাধিকার চুক্তি সম্পন্ন করা হবে। এই চুক্তির অংশ হিসেবে কিনবার্ন স্পিট এলাকাটি নিরস্ত্রীকরণ করা হবে।’

যুদ্ধবন্দি ও বেসামরিক নাগরিকদের ফিরিয়ে আনাসহ অমীমাংসিত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একটি মানবিক কমিটি গঠন করা হবে। সব পক্ষ নথিতে সম্মত হলে তাৎক্ষণিকভাবে পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

পরিকল্পনার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে জেলেনস্কি বলেন, আঞ্চলিক বিষয় এবং জাপোরিঝিয়া এনপিপি পরিচালনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে ইউক্রেনীয় পক্ষ। তার মতে, কিয়েভ বুধবার দিনের পরের ভাগে রাশিয়ার কাছ থেকে একটি প্রতিক্রিয়ার আশা করছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.