আপনি পড়ছেন

গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রি ও সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটেনের চারজন অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে লেখা এক চিঠিতে তারা পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান।

ছবি - সংগৃহীত

ওই সেনা কর্মকর্তারা চিঠিতে উল্লেখ করেন, ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার এখন সময় নয়। সংবাদমাধ্যম টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা ইসরায়েলি মালিকানাধীন বা সমর্থিত প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নিষিদ্ধসহ আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী চার কর্মকর্তা হলেন—অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জন ডেভারেল, যিনি ৩০ বছরেরও বেশি সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন এবং ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের হামলার সময় সৌদি আরব ও ইয়েমেনে প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে ছিলেন; যুক্তরাজ্যের ডিফেন্স একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল অ্যান্ড্রু গ্রাহাম; মেজর জেনারেল পিটার কারি এবং আফগানিস্তানে সাবেক জ্যেষ্ঠ সেনা কমান্ডার মেজর জেনারেল চার্লি হার্বার্ট।

ব্রিটিশ সেনাবাহিনী আগামী বছর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা এলবিট সিস্টেমসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমস ইউকে-কে ২০০ কোটি পাউন্ডের প্রশিক্ষণ চুক্তি প্রদান করবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যেই সাবেক এই সেনা কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করলেন। চুক্তিটি অনুমোদিত হলে এলবিট বছরে ৬০ হাজার ব্রিটিশ সেনাকে প্রশিক্ষণ দেবে। উল্লেখ্য, এলবিট ইসরায়েলের প্রায় ৮৫ শতাংশ ড্রোন ও স্থলভিত্তিক সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে।

গত জুলাইয়ে যুক্তরাজ্য থেকে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি সংক্রান্ত একটি আইনি মামলায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ সূত্র দাবি করেছিলেন, ‘ইসরায়েলের সংঘাত ও লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণের প্রক্রিয়াগুলো অত্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং কঠোর, যা অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মতোই।’ সাবেক কর্মকর্তারা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলেন, ব্রিটিশ সামরিক অনুশীলন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চেয়ে স্পষ্টতই আলাদা। তারা ইসরায়েলের নির্বিচার অস্ত্র ব্যবহারের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, এর ফলে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও এড়ানো যেত এমন বেসামরিক প্রাণহানি এবং বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।’

চিঠিতে শতাধিক মানবিক সংস্থার দুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা, হাসপাতাল ও স্কুলসহ বেসামরিক মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় স্থানগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর বারবার হামলার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হেফাজতে বন্দিদের ওপর নির্যাতনের ব্যাপক অভিযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়। কর্মকর্তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধের প্রমাণগুলো ‘এতটাই সুস্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য যে, অপরাধের দায় এড়াতে ব্রিটিশ সরকারের উচিত অবিলম্বে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা ছিন্ন করা।’

তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য রয়্যাল এয়ার ফোর্স বা ব্রিটিশ চুক্তিবদ্ধ বিমানের ব্যবহার বন্ধ এবং সব ধরনের সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তর স্থগিত করার আহ্বান জানান। যুক্তরাজ্য সরকার এর মধ্যেই ঘোষণা করেছে যে, আগামী বছর থেকে ইসরায়েলিরা রয়্যাল কলেজ অব ডিফেন্স স্টাডিজে ভর্তি হতে পারবে না। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ৫০০টিরও বেশি মিশন পরিচালনার পর অক্টোবরে গাজার ওপর গোয়েন্দা বিমান উড্ডয়ন বন্ধ করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ওই ফ্লাইটগুলো ‘শুধুমাত্র জিম্মিদের অবস্থান শনাক্ত করার জন্য’ নিয়োজিত ছিল। তবে ফিলিস্তিনপন্থী প্রচারকরা এই দাবি অস্বীকার করে বলেছেন, এসব গোয়েন্দা তথ্য গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তা করে থাকতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গত ১০ অক্টোবর একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে ইসরায়েল প্রতিদিন এটি লঙ্ঘন করছে, যার ফলে ৪১১ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গাজায় নৃশংস যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। এতে ৭১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.