তাইওয়ানকে অস্ত্র দিয়ে বিপাকে যুক্তরাষ্ট্র, চীনের ‘ভয়ঙ্কর’ প্রতিশোধ!

তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রির প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ৩০টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ২০টি মার্কিন প্রতিরক্ষা কোম্পানি এবং ১০ জন শীর্ষ নির্বাহীর বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ঘোষণা দেয়। স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করা বেইজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের চলমান উত্তেজনার এটি সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি তাইওয়ানের জন্য ১১ দশমিক এক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র প্যাকেজ ঘোষণা করায় তার প্রতিশোধ হিসেবেই এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এটি তাইওয়ানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এ যাবৎকালের অন্যতম বৃহৎ অস্ত্র প্যাকেজ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তাইওয়ান ইস্যুতে সীমা অতিক্রমকারী যেকোনো উসকানিমূলক পদক্ষেপের জবাবে চীন শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে। একই সঙ্গে তাইওয়ানকে অস্ত্র দেওয়ার বিপজ্জনক প্রচেষ্টা বন্ধ করতে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বোয়িংয়ের সেন্ট লুইস শাখা, নর্থরপ গ্রুম্যান সিস্টেমস করপোরেশন, এল৩হ্যারিস মেরিটাইম সার্ভিসেস ও লাজারাস এআই। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানের চীনে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে এবং দেশটির কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে পারবে না।

একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞাভুক্ত ব্যক্তিদের চীনে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং তাদের চীনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকায় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান অ্যান্ডুরিল ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা এবং নিষেধাজ্ঞাভুক্ত কোম্পানিগুলোর নয়জন জ্যেষ্ঠ নির্বাহীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা শুক্রবার থেকেই কার্যকর হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনে তাইওয়ানকে আত্মরক্ষার সক্ষমতা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ওয়াশিংটনের এই অস্ত্র বিক্রি বেইজিংয়ের সঙ্গে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করলেও তাইওয়ান বরাবরই এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ১৭ ডিসেম্বর সর্বশেষ যে অস্ত্র চুক্তির ঘোষণা দেন, তাতে ৮২টি হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (হিমার্স) এবং ৪২০টি আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যার মূল্য ৪০০ কোটি ডলারেরও বেশি। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো রাশিয়ার আকাশ হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র যা সরবরাহ করছিল, তার অনুরূপ।

এ ছাড়া এই চুক্তিতে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের ৬০টি স্বচালিত হাউইৎজার কামান ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম এবং ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের ড্রোন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছে, এ সহায়তা তাইওয়ানের পর্যাপ্ত আত্মরক্ষা সক্ষমতা বজায় রাখা এবং দ্রুত শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।