তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত, বড় আফটারশকের সতর্কতা

তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ৬.৬ থেকে ৭ বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংস্থা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বড় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও আফটারশকের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের নিরাপদ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে (১৫০৫ জিএমটি) এই কম্পন অনুভূত হয় এবং পুরো দ্বীপ কেঁপে ওঠে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি মাটির প্রায় ৬৭ থেকে ৭২.৮ কিলোমিটার গভীরে এবং এর মাত্রা ছিল ৬.৬। তবে তাইওয়ানের সেন্ট্রাল ওয়েদার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসনের মতে, কম্পনের মাত্রা ছিল ৭।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসনের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা চেন তা-ই বলেন, ‘এটি সাম্প্রতিক কয়েক দশকের মধ্যে তাইওয়ানে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী ভূমিকম্প।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী সপ্তাহের মধ্যে ৫.৫ বা তার বেশি মাত্রার আফটারশক হওয়ার আশঙ্কা আমরা উড়িয়ে দিতে পারছি না। বিশেষ করে উত্তর তাইওয়ানে এর প্রভাব বেশি পড়তে পারে।’

ভূমিকম্পের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, তাইপেইর তাওউয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ছাদের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক নাগরিক তাদের বাসাবাড়ির সামান্য ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। পিটিএস নিউজ নিশ্চিত করেছে যে ইলানের নান’আও শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি) তাদের নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুযায়ী কিছু স্থাপনা থেকে কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে।

দেশটির পারমাণবিক সুরক্ষা কমিশন জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর তারা ১, ২ ও ৩ নম্বর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে এবং সেখানে কোনো অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায়নি। তবে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। কাওশিউং র‍্যাপিড ট্রানজিট ও লাইট রেল পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে এবং নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য তাইপেই মেট্রো চলাচলের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তাইপেই পুলিশ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে দুইজন আটকা পড়ার খবর পাওয়া গেছে এবং ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধারে কর্মী পাঠিয়েছে। উল্লেখ্য, তাইওয়ান ‘প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার’ বা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় অবস্থিত। ১৯৯৯ সালে দেশটিতে ৭.৬ মাত্রার এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।