সোমালিল্যান্ডকে ইসরায়েলের স্বীকৃতি, লোহিত সাগরে উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা

সোমালিল্যান্ডে ইসরায়েলের যেকোনো ধরনের উপস্থিতিকে সামরিক লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা আবদেল-মালিক আল-হুথি। সম্প্রতি সোমালিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল সোমালিল্যান্ডকে ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণার পর এই কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন তিনি। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির নিজস্ব গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছে। খবর আল জাজিরা।

বিবৃতিতে আল-হুথি বলেন, ‘আমরা সোমালিল্যান্ডে যেকোনো ইসরায়েলি উপস্থিতিকে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য একটি সামরিক লক্ষ্য হিসেবে গণ্য করব। এটি সোমালিয়া ও ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের শামিল এবং পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। এই পদক্ষেপকে আফ্রিকা, ইয়েমেন এবং লোহিত সাগর তীরবর্তী দেশগুলোর বিরুদ্ধে একটি শত্রুতামূলক অবস্থান হিসেবে দেখছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

গত শুক্রবার সোমালিল্যান্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। ১৯৯১ সালে সোমালিয়া থেকে একতরফাভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘোষণা দেওয়া সোমালিল্যান্ডের জন্য এটিই কোনো দেশের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রথম আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। এডেন উপসাগরের তীরে অবস্থিত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলের নিজস্ব মুদ্রা, পাসপোর্ট ও সেনাবাহিনী থাকলেও তারা দীর্ঘ সময় ধরে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অপেক্ষায় ছিল।

আঞ্চলিক বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার হলে লোহিত সাগরে ইসরায়েলের প্রবেশাধিকার আরও সহজ হবে। এর ফলে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানো তাদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়েছিল হুথিরা। এর জবাবে ইসরায়েলও ইয়েমেনে পাল্টা হামলা চালায়। তবে গাজায় যুদ্ধবিরতি চলাকালে হুথিরা তাদের আক্রমণ সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছিল।

এদিকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন, মিশর, তুরস্ক, জিসিসি এবং ওআইসি। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও একটি বিবৃতিতে সোমালিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।