উরসুলা: ইইউতে যোগদানই ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির গ্যারান্টি

ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানই ইউক্রেনের জন্য চূড়ান্ত নিরাপত্তা গ্যারান্টি বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন। তিনি মনে করেন, একটি স্বাধীন ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রের সমৃদ্ধি ইইউতে যোগদানের ওপরই নির্ভর করছে। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

উরসুলা তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ‘শেষ পর্যন্ত একটি মুক্ত ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রের সমৃদ্ধি নির্ভর করছে ইইউতে যোগদানের ওপর। এটি নিজেই একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা গ্যারান্টি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইইউতে সম্প্রসারণ কেবল যোগদানকারী দেশগুলোর জন্যই নয়; অতীতের একাধিক সম্প্রসারণ দেখিয়েছে, এর সুফল পুরো ইউরোপই পায়।’

মূলত জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎসের আমন্ত্রণে ‘বার্লিন ফরম্যাটে’ ইউরোপীয় ও কানাডীয় নেতাদের ফোনালাপের পরই উরসুলা এই মন্তব্য করেন। ওই বৈঠকে ইউক্রেনের নিরাপত্তা, যুদ্ধপরবর্তী পুনর্গঠন ও শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক প্রসঙ্গে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অ্যান্তোনিও কোস্তা জার্মান চ্যান্সেলরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা একটি ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই শান্তির জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করতে একমত।’

অন্যদিকে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘ইউক্রেনের মিত্ররা শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিচ্ছে। এখন সবার কাছ থেকে স্বচ্ছতা ও সততা প্রয়োজন, এমনকি রাশিয়ার কাছ থেকেও।’

আলোচনাটিকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব। তিনি জানান, ইউক্রেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সমন্বয় আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ বলেন, ‘ইউক্রেনের জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সব প্রচেষ্টার লক্ষ্য ইউক্রেনের জন্য একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা।’ তিনি জানান, আগ্রহী দেশগুলোর জোট আগামী সপ্তাহে আবারও বৈঠকে বসবে।

সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বলেন, ‘স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি কার্যকর শান্তি অর্জনের জন্য অত্যন্ত জরুরি।’ তিনি রাশিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, যুদ্ধ শেষ করতে তারা গুরুত্ব সহকারে আলোচনায় অংশ নেবে কি না, তা তাদের কর্মকাণ্ডেই প্রমাণিত হবে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক কিছুটা আশার বাণী শুনিয়ে বলেন, ‘শান্তি এখন দৃষ্টিসীমার মধ্যে।’ তবে যুদ্ধ দ্রুত শেষ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলেও তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয় বলে তিনি সতর্ক করেন।

এর আগে গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, ইউক্রেনের পুনর্গঠন নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও তার কথা হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেন, মস্কো পুনর্গঠনে সহায়তা দিতে আগ্রহী, বিশেষ করে স্বল্পমূল্যে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে। ওই দিনই ট্রাম্প ও জেলেনস্কি ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ফোনালাপ করেন, যেখানে যুদ্ধ অবসানের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।