মনে থাকবে মাশরাফির অধিনায়কত্বও

৩৩ রানে চার উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের মহাকাব্যিক এক জুটি। সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের এই জুটিটা গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় এক জয় এনে দিয়েছে। তবে সাকিব-মাহমুদুল্লাহর কাব্য রচনাটা এক পাশে রাখলে ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজার চৌকশ অধিনায়কত্বও মনে থাকবে বহুদিন। 

কাল বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ স্পিনার কমিয়ে একজন পেসার বেশি নিয়ে খেলেছে। চার পেসারকেই দুর্দান্তভাবে কাজে লাগিয়েছেন মাশরাফি। ম্যাচে দারুণ বোলিং করা রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদকে ঠিক সময়ে বোলিং করিয়েছেন। নিজেও দারুণ বোলিং করেছেন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। তবে সবচেয়ে বেশি নজরে এসেছে মোসাদ্দেক হোসেনকে কাজে লাগানোর বিষয়টা।

নিউজিল্যান্ডের ইনিংস ভালোভাবেই তিনশর দিকে এগুচ্ছিলো। কিন্তু মোসাদ্দেক হোসেনকে দিয়ে তিন ওভারের একটা স্পেল করিয়ে নিয়ে সব হিসেব উলট-পালট করে দেন মাশরাফি।

শেষ দশ ওভারে রান বাড়ানোর জন্য হাসফাস করছিলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। এমন অবস্থায় নিয়মিত বোলারদের রেখে ৪২তম ওভারে গিয়ে মাশরাফি বল তুলে দেন মোসাদ্দেকের হাতে। উইকেটে তখন দুই মারমুখী ব্যাটসম্যান জেমি নিশাম ও কোরি অ্যান্ডারসন। নিয়মিত বোলারদের রেখে মোসাদ্দেককে দেওয়াতে অনেকে অশ্চর্যই হয়েছিলেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তটাই ম্যাচের রং পাল্টে দিয়েছে।

১২ বলে মধ্যে তিন উইকেট তুলে নেন মোসাদ্দেক। যাতে নিউজিল্যান্ড ২৬৫ রানের বেশি তুলতে পারেনি। ম্যাচ শেষে মাশরাফি বলে দিলেন মোসাদ্দেককে দিয়ে বাজি ধরেননি, পরিকল্পনা করেই এমনটা করেছিলেন শেষ পাওয়ার প্লেতে।

ম্যাচ শেষে ইয়ান বিশপ মাশরাফিকে আলাদা করে জিজ্ঞেসা করলেন প্রশ্নটা। মাশরাফির উত্তর, ‘সে (মোসাদ্দেক) নিউজিল্যান্ডে জিমি নিশামকে দুবার আউট করেছিল, কোরি অ্যান্ডারসনকেও একবার আউট করেছিল। আমার কাছে এটা খুব বড় ব্যাপার মনে হয়েছে। আমি তাই অপেক্ষা করছিলাম, কখন বাঁহাতিরা আসবে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানরা একবার উইকেটে আসার পর, আমার জন্য খুব সহজ হয়েছিল এই সিদ্ধান্তটা নিতে (মোসাদ্দেককে দিয়ে বোলিং করানো)। আমি সে সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলাম।’

সাকিব- মাহমুদুল্লাহর অবিস্মরণীয় জুটি কারণে যতোটা এই ম্যাচের মনে কথা মনে রাখবে বিশ্ব, তার কিছু কম নয় মাশরাফির অধিনায়কত্বও।