শিগগিরই বদলে যাচ্ছে ঢাকা চিড়িয়াখানা

দেরিতে হলেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগছে রাজধানীর জাতীয় চিড়িয়াখানায়। আর অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বিশ্বমানের আধুনিক চিড়িয়াখানায় রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে মহানগরীর অন্যতম এই বিনোদন কেন্দ্রটি। ইতোমধ্যেই এ লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করার কাজ অনেকখানি এগিয়ে গেছে।

নতুনভাবে শুরু করার পর চিড়িয়াখানায় নানা ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যোগ হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম।

এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে চিড়িয়াখানার ভাসমান হোটেলে বসে বন্যপ্রাণী দেখা, নাইট সাফারি, বিনিময়ের আওতায় পশু সংগ্রহ, আধুনিক ভেটেরিনারি হাসপাতাল, ফুড সেন্টারসহ আরও নানা কিছু। এছাড়া চিড়িয়াখানায় থাকা বর্তমান প্রাণী ও পাখির খাঁচাগুলো পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হবে।

ইতোমধ্যেই চিড়িয়াখানায় আধুনিক ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই হাসপাতালে বাঘ, সিংহ ও হাতির মতো বৃহৎ বন্যপ্রাণীর চিকিৎসা ও অপারেশন করা সম্ভব বলে জানিয়েছে চিড়িয়াখানা সূত্র।

এর আগে গত মে মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. ছায়েদুল হকের সভাপতিত্বে চিড়িয়াখানার কার্য উপদেষ্টা কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে নেয়া পরিকল্পনার একটি খসড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া প্রকল্প সহায়তা হিসেবে চিড়িয়াখানার তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়নে ৪৮ লাখ টাকার একটি বরাদ্দ দিয়েছে জাপান সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় চিড়িয়াখানায় আগত শিক্ষার্থীদের জন্য পশু-পাখি বিষয়ক অডিও ও ভিডিও প্রোগ্রাম তৈরি করে তাদেরকে দেখানো হবে।

পরিকল্পনায় চিড়িয়াখানায় আগতদের বিনোদনের জন্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণের কথাও রয়েছে। একইসাথে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে বিদেশি প্রাণী ও পাখি সংগ্রহের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রাণী বিনিময়ের আওতায় কক্সবাজার জেলার ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক থেকে এক জোড়া জলহস্তির বিনিময়ে এক জোড়া বাঘ ও এক জোড়া সিংহ আনা হবে। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার থেকে আনা হবে ১৫৪ প্রাণী ও পাখি।

বর্তমানে চিড়িয়াখানায় কিছু প্রাণীর সঙ্গী মারা যাওয়ায় সেগুলো একা হয়ে আছে বলে জানান প্রাণী পুষ্টি কর্মকর্তা আবু সাঈদ কামাল বাচ্চু। তিনি জানান, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই প্রাণিগুলোর জুঁটি আনার জন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ২৬ প্রজাতির ১১৪টি দুষ্প্র্রাপ্য প্রাণী ও পাখি সংগ্রহ করা হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ১০ প্রজাতির ৪০টি মাংসাশী প্রাণী, ২৩ প্রজাতির ২২১টি তৃণভোজী প্রাণী, ২৫ প্রজাতির ২৪৭টি ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ, ৫৬ প্রজাতির ১০৬টি পাখি ও ২৩ প্রজাতির ৮০১টি দেশি-বিদেশি মাছ রয়েছে।