জীবন যত আধুনিক হচ্ছে পাল্লা দিয়ে ততই জটিলতা বাড়ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কগুলো আর তার সঙ্গে জড়িত মানুষগুলোর মধ্যে বেড়ে চলেছে ব্যস্ততা। ক্ষণে ক্ষণে সেই ব্যস্ততা রূপ নিয়েছে বিচ্ছেদে। আর তাই আজকের যুগে বিচ্ছেদের সংখ্যাটাও আঁতকে ওঠার মতো।

divorce problem

শুধুমাত্র ঢাকা সিটিতেই এই হার আপনাকে বিচ্ছেদের ভয়াবহতার খণ্ডচিত্র দেখিয়ে দেবে। এই শহরে প্রতিদিন প্রায় পঞ্চাশ থেকে ষাটটি বিচ্ছেদের আবেদন পড়ছে। রাজধানীতে নিস্পত্তির অপেক্ষায় আছে প্রায় ঊনপঞ্চাশ হাজার বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন। তবে আশঙ্কার কথা হচ্ছে, দিন দিন এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নারীরা বিচ্ছেদের আবেদনের দিক থেকে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে আছেন! আর সারা দেশে এই চিত্র আরো ভয়াবহ।

ছোট ছোট সমস্যার কারণেই স্বামী-স্ত্রীতে দুরত্ব তৈরি হয়। মনোবিজ্ঞানীরা বলেছেন, যতোটা সম্ভব সঙ্গীকে সময় দিন, কাছে না থাকলেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। আর প্রযুক্তির এই যুগে তো যোগাযোগ রাখা খুবই সহজ। সপ্তাহে অন্তত তিন-চার দিন ভিডিও চ্যাঁট করুন। সময় বের করে ফোন দিন তাকে। কে না জানে, যোগাযোগের অভাব হলে সামান্য বিষয়গুলোও বড় হয়ে দেখা দেয়। আর সেখান থেকেই ডিভোর্সের মতো চুড়ান্ত সিদ্ধান্তগুলো আসে।

বাসর রাতে বিড়াল মারার কথাটি অহরহই শোনা যায়। কিন্তু আসলে কি বুঝানো হয় এর দ্বারা জানেন কি? মূলত একজনের উপর অন্যজনের আধিপত্য বিস্তার করাই এই কথাটির অর্থ। কিন্তু আদতে এমন ধারণা পোষণ করলে সেই সংসার খুব বেশিদিন টেকেও না, এমনটাই দাবি করেছেন ভারতীয় আইনজীবীরা। তাদের মতে, একজনের উপর অন্যজনের নিয়ন্ত্রণের মনোভাবের কারণেই একজন অন্যজনের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকেন। আর এতে বিরক্তি ও অস্বচ্ছতা দিন দিন বেড়ে যায়। পরকীয়ার মত গর্হিত কাজগুলোও এখান থেকেই শুরু হয় আর পরবর্তিতে যার ফলাফল ডিভোর্সে গড়ায়। তাই সঙ্গীকে নিয়ন্ত্রণ করবেন এটা ভুলে সঙ্গীর বন্ধু হয়ে উঠুন।

যেকোন ধরণের নেশা মানুষের জীবনের অশান্তি ডেকে আনে। ধূমপান, মদ্যপান, জুয়ার মত খারাপ নেশাগুলো সামাজিক জীবনে খুবই খারাপ প্রভাব ফেলে। নেশায় বুদ হয়ে থাকা স্বামী বা স্ত্রী কেউই নিজেদের সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। তাই এমন মানুষ নিয়ে সংসার টিকিয়ে রাখা একসময় প্রায় অসম্ভব হয়ে পরে। তাই সংসার করার জন্য হলেও এ ধরণের বদ অভ্যাস থেকে থাকলে আজই ত্যাগ করুন।

স্বাম-স্ত্রীর সম্পর্কে নিজের মতের সাথে খুব বেশি অমিল থাকলে সম্পর্ক রাখা কষ্টকর হয়ে ওঠে। প্রেমের ক্ষেত্রে দেখা যায় অমিলগুলো প্রথম প্রথম চোখে পড়েনা বা পরের দিকে পড়লেও ঠিক হয়ে যাবে ভাবা হয়। কিন্তু এই সম্পর্কই যখন বিয়েতে গড়ায় তখন কিছুদিন পর থেকে ঝামেলাও শুরু হয়ে যায়। কেউ কেউ মানিয়ে নিতে পারলেও যারা একদমই পারেন না তারাই পরবর্তিতে বিচ্ছেদের দিকে এগিয়ে যান। তাই এমন কিছু হতে থাকলে আগেই বুঝে নিন।

জীবন নিরবিচ্ছিন্ন সুখের সাগর নয়, মাঝে মাঝেই কষ্ট হানা দিবেই। আর অনুভুতিগুলোও সর্বদা একই রকম থাকেনা যার ফলে নিজেদের মাঝে সম্পর্কের টানাপোড়নও চলে আর সেখান থেকে যদি দূরত্বটা বাড়তে থাকে বা দূরত্বের অনুভুতি কাজ করে তবে এর থেকে বিচ্ছেদ হতে পারে। 

মানুষের জীবনে কাজ তো থাকবেই, পাশাপাশি সঙ্গীকে তার পাওনা সময়টুকু দিন। উপলক্ষ ছাড়াই একদিন অফিস থেকে ছুটি নিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসুন। নয়তো একটা বিকেল কফির মগ হাতে বারান্দায় কাটান। আর তা না হয়, জোড় করে সঙ্গীকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাঁধিয়ে ফেলুন না..। দেখবেন সেবা করার জন্য সঙ্গীর হাতের চেয়ে তার ভালোবাসাই আগে পাবেন। বকুনির সঙ্গে সঙ্গে ভালোবাসাটাও পাবেন নিশ্চিত থাকুন।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.