যে রোমাঞ্চ ছুঁয়ে যাচ্ছে নাসিরকে

টেস্ট খেলেছেন সব মিলিয়ে ১৭টি। কিন্তু নাসির হোসেন কখনোই টেস্ট দলের নির্ভরতা ছিলেন না। ২০১৫ সালে বাদ পড়ার পর তাই টেস্ট দলে তার না থাকা নিয়ে তেমন কোনো আলোচনাও ছিলো না। সেই নাসির আবার ফিরেছেন টেস্ট দলে। তাও অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে সিরিজে। যাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের কারো খেলার অভিজ্ঞতাই নেই। নাসির তাই স্বাভাবিকভাবেই রোমাঞ্চিত।

টেস্ট দলের মতো নাসির ‘নাই’ হয়ে গেছিলেন ওয়ানডে দল থেকেও। অথচ ওয়ানডেতেই তাকে মনে করা হয় সবচেয়ে বেশি কার্যকর। পছন্দের ফরম্যাট থেকে বাদ পড়ার মানসিকভাবেই ভেঙে পড়েছিলেন নাসির। কিন্তু ভেঙে স্থবির হননি তিনি। বরং যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই দেখিয়েছেন ব্যাটের ঝলক। সর্বশেষ প্রিমিয়ার লিগে তার ব্যাটে ভর করেই শিরোপা জিতেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। সেই পারফর্মে ভর করেই মূলত টেস্ট দলে আবার ফিরে পেয়েছেন জায়গা।

টেস্ট দলে ফেরা এবং প্রতিপক্ষ হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে পাওয়া; নাসিরের রোমাঞ্চিত হওয়ার কারণ যথেষ্টই আছে। আজ সংবাদ সম্মেলনে এসে সেই রোমাঞ্চটা মোটেই আড়াল করেননি তিনি।

দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় পর টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে পাওয়ার রোমাঞ্চ নিয়ে প্রশ্ন করতেই নাসির বলেন, ‘আমি বেশ রোমাঞ্চিত। কারণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১১ বছর পর টেস্ট খেলার সুযোগ এলো। আমি কখনো তাদের বিপক্ষে খেলিনি। অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব ক্রিকেটকে শাসন করে। তাদের বিপক্ষে খেলা এবং ভালো করতে পারার অর্থ অনেক। আমরা যদি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খুব ভালো পারফর্ম করতে পারি, তাহলে তা ক্যারিয়ারের অনেক কিছু বদলে দিবে।’

নাসির অবশ্য এই রোমাঞ্চে ভেসে যেতে নারাজ। বরং তার চিন্তা-চেতনার সবটুকুজুড়ে কেবল পারফর্ম করার বাসনা। এই বাসনা হবে নাই বা কেনো— জাতীয় দলের প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া দরজাটা খুলতে যে তাকে পারি দিতে হয়েছে একটার পর একটা চ্যালেঞ্জ। অপেক্ষা করতে হয়েছে দিনের পর দিন।

‘গত দুই বছর টেস্ট খেলিনি। তবে খুব ইচ্ছে ছিলো। আমি জানতাম, টেস্ট দলে ফিরতে হলে পারফর্ম করার কোনো বিকল্প নেই। তাই যখনই যেখানে সুযোগ পেয়েছি, তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। পারফর্ম করাটাকে ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। আমার মনে হয় সেই চ্যালেঞ্জ জিততে পারাটাই আমাকে আবার জাতীয় দলে নিয়ে এসেছে।’

নাসির চান, পারফর্মের ধারাবাহিকতাটা জাতীয় দলেও ধরে রাখতে। এ জন্য যতো পরিশ্রম করা দরকার, ততোটা করতে কোনো রকম কার্পণ্য করতে নারাজ তিনি।

নাসির এখন পর্যন্ত মোট ১৭টি টেস্ট খেলে এক সেঞ্চুরি এবং ছয় হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩৭.৩৪ গড়ে ৯৭১ রান করেছেন। টেস্টে বল হাতে আটটি উইকেটও নিয়েছেন তিনি। তেমন আহামরি পারফর্ম নয় নিশ্চয়। কিন্তু নাসির যদি এবার তার সামর্থ্যের পুরোটা দিয়ে পারফর্ম করেন, তবে আগের ব্যর্থতার ইতিহাস নিশ্চয় মনে থাকবে না সমর্থকদের।

এ রকম সম্ভাবনার রোমাঞ্চ নিশ্চয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার চেয়ে কম রোমাঞ্চকর নয়!