বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে চেয়ারম্যানের তুলনা: কারাগারে ১৩ শিক্ষক

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে তুলনা করার অভিযোগে চট্টগ্রামের ৬ উপজেলার ১৩ শিক্ষককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ আছে, ওই শিক্ষকরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও ওই প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা নিয়েছিলেন।

বুধবার ২৩ আগস্ট চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষকগণ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক আবেদন না মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’

পুলিশ তথ্য মতে উল্লেখিত শিক্ষকরা বাঁশখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬টি উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আদালত বলছে, গতবছরের ১৭ জুলাই অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায় ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নে এই অপরাধমূলক কাজটি করা হয়। প্রশ্নপত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বাঁশখালী গণ্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীকে তুলনা করা হয়েছিল। এই প্রশ্নেই দক্ষিণ চট্টগ্রামের ছয় উপজেলার মোট ৯৭টি উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা নেয় কর্তৃপক্ষ।

বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী বাঁশখালী বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দুকুল বড়ুয়াকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী শিক্ষকসহ অভিযুক্ত ছয় উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়।

জানা গেছে, মামলাটি দায়েরের পর অভিযুক্ত ওই ১৩ শিক্ষক হাইকোর্ট থেকে তিন মাসের আগাম জামিন নেন। কিন্তু আজ বুধবার তাদের আগাম জামিনের মেয়াদ শেয় হয়। তারা পুণরায় জামিনের আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো ১৩ শিক্ষক হলেন, ‘প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী শিক্ষক দুকুল বড়ুয়া, প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের, প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক, প্রধান শিক্ষক বাদল চন্দ্র দাশ, প্রধান শিক্ষক অজিত চারণ, সিনিয়র শিক্ষক এম ওয়ায়েদ উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী, সহকারী শিক্ষক আমির হোসেন, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রধান শিক্ষক বিজন ভট্টাচার্য, প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হোসেন, শিক্ষক মোহাম্মদ মিয়া ও সিনিয়র শিক্ষক শ্যামল কান্তি দে।