অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর যখন নিশ্চিত হলো, তখনই ধারণা করা হচ্ছিলো যে এই সফরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হবেন নাথান লায়ন। এই ধারণাটা যে এইভাবে করুণ সত্যে পরিণত হবে, তা নিশ্চয় দূরতম কল্পনায়ও ভাবেননি মুশফিকরা। না ভাবা সেই শঙ্কাই সত্য হয়ে এলো সিরিজে। দুই ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা দিয়েছেন তিনিই।

nathan lyon takes 23 wickets in bangladesh series

ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে লায়ন পেয়েছিলেন তিন উইকেট। সাকিব আল হাসান, মেহেদি হাসান ও তাইজুল ইসলামের উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।

লায়ন আরো জ্বলে ওঠেন ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে। এবার তিনি নেন ছয় উইকেট। ১৬১ রান দিয়ে নয় উইকেট নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন তিনি। ঢাকায় লায়নের এমন পারফর্ম তেমন একটা আলোচনায় আসেনি সাকিব আল হাসানের কারণে। দুই ইনিংসে গুনে গুনে ১০টা উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে তিনি এনে দেন ইতিহাস কাঁপিয়ে দেয়া এক জয়।

টেস্টে ক্রিকেটে নিজেদের ইতিহাসের সেরা সাফল্য পাওয়ার আনন্দেই হয়তো, বাংলাদেশ বেমালুম ভুলে বসেছিলো লায়নের কথা। তাই যদি না হবে, ঢাকার তুলনায় স্পিনারদের কম সহায়তা দেয়া চট্টগ্রামের উইকেটে কেনো তার সামনে রান তুলতে এইভাবে মাথা ঠুকে মরতে হলো মুশফিকদের?

চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসেই সাত উইকেট তুলে নেন লায়ন। এর মধ্যে প্রথম চার উইকেট ফেলে দিয়ে বিরল এক রেকর্ডও গড়েন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড় শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাসে এবারই প্রথম টেস্টের কোনো ইনিংসে কোনো দলের প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে একাই আউট করলেন কেউ। এটি যেমন রেকর্ড, তেমনই রেকর্ড; প্রথম চার ব্যাটসম্যানকেই এলবিডব্লিউ করা।

চট্টগ্রামে প্রথম দুই দিনে স্পিনাররা কোনো টার্নই পাননি। উইকেটের এমন বিমাতাসূলভ আচরণ আঁচ করতে পেরে লায়ন বোলিং করা শুরু করেন স্ট্যাম্পকে লক্ষ্য বানিয়ে। অর্থাৎ টার্নের আশা না করে কেবল বোলিং করে গেছেন ঠিক জায়গায়। প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ করতে পেরেছেন মূলত এ কারণেই।

মজার ব্যাপার হলো, চট্টগ্রামে প্রথম চার উইকেট এলবিডব্লিউতে নেয়ার পর আরো নয় উইকেট নিয়েছেন তিনি। কিন্তু এলবিডব্লিউ করতে পারেননি আর কাউকে; যেনো মুশফিকরা বুঝে গিয়েছিলেন তার কৌশল!

আদতে কিন্তু তা নয়। বরং উইকেট এবং মুশফিক-তামিমদের ধরণ; এ সব বিবেচনায় রেখেই বোলিং করে গেছেন লায়ন এবং তুলে নিয়েছেন একের পর এক উইকেট। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনে প্রথম আঘাতটা হানেন তিনিই।

সব মিলিয়ে দুই টেস্টে লায়ন তুলে নেন ২২টি উইকেট। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ ছিলো স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলের। ২০০৩ সালে, বাংলাদেশের প্রথম অস্ট্রেলিয়া সফরে তিনি দুই ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৭টি উইকেট।

রেকর্ড শুধু এটিই নয়। চট্টগ্রামে ১৩ উইকেট নিয়ে ইয়ান বোথামের পাশে নাম লেখিয়েছেন লায়ন। নন-এশিয়ান সফরকারী দেশের ক্রিকেটার হিসেবে ইয়ান বোথামের পর লায়নই প্রথম বোলার হিসেবে এক ম্যাচে ১৩ উইকেট নেয়ার কীর্তি দেখালেন। অস্ট্রেলিয়ান অফস্পিনার হিসেবে এক টেস্টে ১০ নেয়ার কীর্তির ছোট্ট তালিকাতেও নাম উঠেছে লায়নের। তার আগে এমন বোলিং করতে পেরেছিলেন শুধু হাগ ট্রাম্বল।

এশিয়াতে লায়নের এমন বোলিং অবশ্য একেবারে নতুন কিছু নয়। চলতি বছর ভারত সফরে এসেও দারুণ বোলিং করেছিলেন তিনি। চার ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। এর মধ্যে এক ইনিংসে আট উইকেট নেয়ার কীর্তিও আছে তার। কিন্তু বাংলাদেশের বিপক্ষে কীর্তিটা সে তুলনায় অনেক বড়।

লায়ন তার ক্যারিয়ারে এর চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটা সিরিজেই— ২০১৪-১৫ মৌসুমের বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় ওই সিরিজের চার ম্যাচে তিনি নিয়েছিলেন ২৩ উইকেট। তারপরও মনে হয়, সদ্য সমাপ্ত সিরিজটিই এখন পর্যন্ত লায়নের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় সিরিজ।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.