রোহিঙ্গাদের ঘরে ঘরে নবজাতক, প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে ১২টি শিশু

সরকারি হিসাবে বলছে, মিয়ানমার থেকে নতুন করে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে গর্ভবতী মহিলা আছেন ৭০ হাজার। নতুন খবর হলো, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কক্সবাজারের সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, রোহিঙ্গা পরিবারগুলোতে গত ৩০ দিনে ৩৫০টি শিশু জন্ম নিয়েছে। সেই হিসাবে গড়ে প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে ১২টি শিশু। আর প্রত্যেক ঘরেই ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুতো আছেই।

সিভিল সার্জন অফিস বলছে, সরকারি চিকিৎসকের বাইরেও স্থানীয়ভাবে অনেক শিশু জন্ম নিচ্ছে, যার প্রকৃত তথ্য প্রশাসন জানে না। তবে প্রতিটি অস্থায়ী ক্যাম্পের ঘরে ঘরে অন্তত একজন করে গর্ভবতী নারী আছেন। নবজাতক এবং প্রসূতির স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কক্সবাজারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত মাত্র একজন নবজাতকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা.শেখ আব্দুস সালাম বলেন, '২৯ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার উচ্চপর্যায়ে আমার পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৫ আগস্টের পর এখন পর্যন্ত ৩৫০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে  ১২টি করে শিশু জন্ম নিচ্ছে। তবে প্রকৃত হিসাবটা আরো বেশি হবে। প্রায় ৭০ হাজার গর্ভবতী রোহিঙ্গা নারী ক্যাম্পে অবস্থান করছে বলে জানতে পেরেছি। প্রসূতি ও নবজাতকের চিকিৎসার ব্যাপারে আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি।'

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং কমিউনিটি ক্লিনিক ও নারীবান্ধব সেবাকেন্দ্রে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলে শিশুর জন্ম দেন মিয়ানমারের মংডু জেলার রেজিয়া বেগম। তার বোনও বুধবার ছেলে শিশুর জন্ম দেন। একই দিন উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মংডু জেলার জান্নাত দুই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এভাবেই রোহিঙ্গা নারীরা বিভিন্ন অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিভিন্ন এনজিওর ক্যাম্প এবং কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নবজাতকের জন্ম দিচ্ছেন। পাশাপাশি ধাত্রী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাচ্চা প্রসবের ঘটনাতো ঘটছেই।

কক্সবাজার উখিয়ার কুতুপালং কমিউনিটি ক্লিনিক ও নারীবান্ধব সেবাকেন্দ্রের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অজিত বড়ুয়া বলেন, 'প্রত্যেকদিন দুই শতাধিক রোহিঙ্গা রোগী আসছেন। যার মধ্যে কমপক্ষে ২৫-৩০ জন গর্ভবতী।'

উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স হাবিবা জান্নাত জানান, বিগত এক মাসে ১৫ টি শিশু জন্ম নিয়েছে। 

জানা গেছে, উখিয়া উপজেলার খোলা ২১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যে বালুখালী, কুতুপালং, রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা হেলথ ক্যাম্প এবং এমএসএফ ক্লিনিকে বাচ্চা প্রসবের সুবিধা আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ডেলিভারি হচ্ছে।