বিশ্বকাপে কি খেলতে পারবে আর্জেন্টিনা, কি বলছে সমীকরণ?

রাশিয়া বিশ্বকাপে কি খেলতে পারবে আর্জেন্টিনা? এ প্রশ্নের উত্তর মেলাতে যেয়ে নানা সমীকরণ খুঁজছেন ভক্ত ও বিশ্লেষকরা। তবে এই প্রথম আর্জেন্টিনার বাদ পড়ার আশঙ্কাই সবচেয়ে বেশি অনুভব করছেন তারা। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে মোট চারটি দল সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে।

আর পঞ্চম দলটির বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা পেতে ওশেনিয়া অঞ্চলের শীর্ষ দলের সঙ্গে খেলতে হবে প্লে অফ। জয়ী হলেই মিলবে সুযোগ। কিন্তু আর্জেন্টিনা যে বর্তমানে নিরাশার সাগরে ডুবতে বসেছে! মাত্র একটি ম্যাচ বাকি, এমন অবস্থায়ও আর্জেন্টিনা নেই শীর্ষ পাঁচের মধ্যে।

আর্জেন্টিনার ভাগ্য এতটাই বাজে হয়ে ধরা দিল যে, ক্লাব ফুটবলে গোল বন্যা বইয়ে দেওয়া সব স্ট্রাইকার আর্জেন্টিনার জার্সি পরলেই যেন গোল করতে ভুলে যান। বাছাই পর্বে ১৭ ম্যাচে মাত্র ১৬ গোল মেসি-হিগুয়েইন-আগুয়েরো-দিবালাদের। এর ফলে ১৭ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে ১০ দলের মধ্যে এখন তারা ছয়ে।

অন্যদিকে সমান পয়েন্ট থাকলেও আর্জেন্টিনার চেয়ে ১০ গোল বেশি ব্যবধান নিয়ে পেরুর বর্তমান অবস্থান পাঁচ। আর নিজেদের মাঠে প্যারাগুয়ের কাছে শেষ মুহূর্তে ২-১ ব্যবধানে হেরে গেছে কলম্বিয়া। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে কলম্বিয়াও। দুর্বল ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ড্র করেছে বলে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে পারেনি উরুগুয়েও। তবে উরুগুয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কারণ পেরু কিংবা আর্জেন্টিনা নিজেদের শেষ ম্যাচে ৯ গোলের ব্যবধানে না জিতলে বিশ্বকাপে নিশ্চিত খেলতে যাচ্ছে উরুগুয়ে।

ইকুয়েডরের প্লে অফ খেলার স্বপ্নটাও শেষ হয়ে গেছে এক ঝটকায়। কারণ আজ রাতে ইকুয়েডরকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে চিলি। ফলে চিলি উঠে গেছে তিন নাম্বারে।

ছিটকে পড়া ইকুয়েডরের মাঠেই বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তিন হাজার মিটার ওপরের এ মাঠে খেলতে অস্বস্তিতে ভোগে সবাই। মেসিদের শেষ ম্যাচের জন্য এটিই যেন সবচেয়ে কঠিন ভেন্যু।

তবে এর উল্টো পিঠেও একটা সুসংবাদ পাচ্ছে আর্জেন্টিনা। তিনে থাকা চিলির শেষ ম্যাচ ব্রাজিলের বিপক্ষে, সেটাও সাও পাওলোতে। চার ও পাঁচে থাকা কলম্বিয়া ও পেরু লড়বে পরস্পরের বিপক্ষে। ফলে আর্জেন্টিনার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী যারা, তাদের সবার পয়েন্ট হারানোর ভালো সম্ভাবনা আছে। আর্জেন্টিনা যদি নিজেদের শেষ ম্যাচে জিতে যায় এবং কলম্বিয়া ও পেরুর মধ্যকার ম্যাচটি ড্র হলেই বিশ্বকাপ নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকবে না মেসি-ডি মারিয়াদের।

আর চিলি ও কলম্বিয়া যদি নিজেদের ম্যাচ জিতে যায়, তবে ইকুয়েডরের মাঠে জয় পেলেও প্লে অফ খেলতে হবে আর্জেন্টিনাকে। এমন অবস্থায় প্রয়োজনে প্লে অফ খেলেও ফাইনালে যাওয়ার জন্য রাজি আর্জেন্টিনা। কারণ আর্জেন্টিনার ভাগ্য এখন আর নিজেদের হাতে নেই। ফলে চরম এক অনিশ্চয়তা আর শেষ সম্ভাবণার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে দলটি।