এবার প্রধান বিচারপতির বাসভবনে গওহর রিজভী

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। শুক্রবার, ৬ অক্টোবর বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনে যান তিনি।

সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করেন এবং বেলা সোয়া ১২টার দিকে তিনি বেরিয়ে আসেন। অন্যদিকে গওহর রিজভী বেরিয়ে আসার পরপরই সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্টার (বিচার ও প্রশাসন) সাব্বির ফয়েজ প্রধান বিচারপতির বাসায় প্রবেশ করেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।

সাব্বির ফয়েজের পর প্রধান বিচারপতির বাসায় ঢোকেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। তারা দুজনকে একসাথে দুপুর ১টার দিকে প্রধান বিচারপতির বাসা থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে।

গত ২৭ আগস্ট থেকে দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় পর (সরকার ঘোষিত ছুটি এবং সুপ্রিমকোর্টের অবকাশকালীন ছুটি শেষে) দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট খুলেছে গত ৩ অক্টোবর। তবে আদালত খোলার আগেই প্রধান বিপারপতি এক মাসের ছুটিতে যাওয়ার খবর নিয়ে নানা মহলে নানান ধরনের প্রশ্ন উঠতে থাকে।

আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি ক্যান্সার আক্রান্ত এবং এ জন্য তিনি ছুটি চেয়ে একটি আবেদন করেছেন। তবে গতকাল প্রধান বিচারপতি স্বস্ত্রীক ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা দিতে যাওয়ার পর ফের প্রশ্ন উঠতে থাকে প্রধান বিচারপতি আসলেই কতটা অসুস্থ।

অনেকেই প্রধান বিচারপতির এই লম্বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি স্বেচ্ছায় নাকি বাধ্য করা হয়েছে তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেন। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দেয়ার কারণে সরকারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সরাসরি বিরোধিতা প্রকাশ পেয়েছিল। ফলে সরকারের পক্ষ থেকে কোন চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছিল প্রশ্ন।

অন্য দিকে প্রধান বিচারপতি ছুটিতে যাওয়ায় আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। আর এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতি চিকিৎসার নিতে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করেন। বাতিলের মূল রায়টি প্রধান বিচারপতিই লেখেন। রায়ে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজ, রাজনীতি, নির্বাচন কমিশন ও সংসদ এবং সামরিক শাসন নিয়ে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেন।

তবে সরকারের দায়িত্বশীল অনেকেই রায়ের ওই পর্যবেক্ষণের তীব্র সমালোচনা করেন। একপর্যায়ে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তুলেন।