রোহিঙ্গাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার দাবি হেফাজতের

পাশ্ববর্তী মিয়ানমারে মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক চলমান নিধনযজ্ঞ, খুন, ধর্ষণ আর হত্যাযজ্ঞ থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন কমপক্ষে ৬ লাখ অসহায় রোহিঙ্গা মুসলমান। এই সব অসহায় রোহিঙ্গাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে ধর্মভিত্তিক বৃহত্তম সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল তাদের এক সংবাদে এমনটিই জানিয়েছে। বলা হচ্ছে, গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে হেফাজত আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এমন প্রস্তাব দিয়েছেন সংগঠনটির মুখপাত্র আজিজুল হক ইসলামাবাদী।

ডেইলি মেইল তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে প্রায় ১৫ হাজারের অধিক হেফাজত সমর্থক বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে হেফাজত নেতা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, 'অবিলম্বে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে সরকারকে অনুরোধ করছি রোহিঙ্গাদের অস্ত্র ও সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক। তারা যেন নিজেদের মাতৃভূমি আরাকানকে স্বাধীন করতে পারে।'

বিগত কয়েক সপ্তাহে হেফাজত ছাড়াও বাংলাদেশের অধিকাংশ ইসলামি দল ও সংস্থা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে একাধিক বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সেসব সমাবেশেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সরকারকে যুদ্ধ ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়।

এর আগে এক সভায় মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে মুসলমানদের ওপর চলমান পৈশাচিক গণহত্যা, নির্মম নির্যাতন ও বিতাড়ন বন্ধ করে তাদের নাগরিক অধিকার দিয়ে আরাকানে পুনর্বাসনের আহ্বান জানান হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষায় এখনি আরাকান রাজ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা জরুরি। দেশটির ওপর অর্থনৈতিক ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপে মুসলিম দেশগুলোর নৈতিক দায়িত্ব।'

শফী বলেন, 'সংখ্যালঘু মুসলিমদের নৃশংসভাবে গণহত্যা পরিচালনা, তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার দায়ে এবং ইতিহাসের নির্মম মানবতার বিরোধী অপরাধের জন্য থেইন সেইন সরকার এবং নোবেল জয়ী অং সান সুচিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।'

তার আগে রাজধানীতে রাজধানীতে হেফাজতের এক সমাবেশে বলা হয়, একমাত্র স্বাধীন রাজ্য গঠনের মাধ্যমেই দীর্ঘদিন ধরে চলা রোহিঙ্গা সংকটের সামাধান আনা সম্ভব। শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিয়ানমার এই সমস্যার সমাধান না করলে আরাকান রাজ্যকে স্বাধীন করতে বাংলাদেশ সরকারকে সামরিক অভিযান চালাতে হবে।'