আপনি পড়ছেন

বকশিবাজারের অস্থায়ী আদালতকে ফখরুদ্দীন-মঈনউদ্দীনের শাসনামলের আদালতের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। নিম্ন আদালতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকায় বিচারকরা যথাযথভাবে বিচার করতে পারছেন না এমন মন্তব্য করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বকশীবাজার কোর্ট ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দীনের শাসনামলের কোর্টের মতো।’

Khaleda zia bakshibazar court

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতে আজ (বৃহস্পতিবার) আত্মপক্ষ সমর্থন করে আংশিক বক্তব্য দেয়ার সময় খালেদা জিয়া এ কথা বলেন। তার সোয়া ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দেয়া বক্তব্যে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সরকারের সমালোচনা করেন।

এ সময় খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে করা এ মামলাকে বানোয়াট ও মিথ্যা বলে অভিহিত করেন। আদালতে অভিযোগ করে বলেন, ‘হয়রানি ও হেনস্তার জন্যই এ মামলা দেয়া হয়েছে।’ বেগম জিয়ার তার বক্তব্যে আদালতকে জানান, এই মামলায় হয়রানির কারণে তার ব্যক্তিগত জীবন ব্যহত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এই মামলায় দুদক যে অভিযোগ এনেছে তাও স্ববিরোধিতায় পরিপূর্ণ। এটি দুদকের আইনের কর্তৃত্ব ও আওতার বাইরে।’

তিনি তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি নিজেকে খুবই সামান্য একজন মানুষ মনে করি। এই দেশ ও জাতির স্বার্থে আমি জীবনের সীমিত শক্তি, মেধা ও জ্ঞানকে উৎসর্গ করে দিয়েছি।’

তিনি প্রথমেই প্রশ্ন তুলে বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের মামলার বিচারকাজ যেখানে করা হয়েছে, সেখানে আমার মামলার বিচার কেন করা হচ্ছে?

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আরও যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলো অন্য আদালতে বিচারাধীন হলেও এ দুটি মামলা এখানে আনা হল কেন? এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য বিচারের নামে আমাকে জনসমক্ষে হেনস্থা করা, আমাকে অপমান করা।’

খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘এটি থেকেই প্রমাণিত হয়, সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে আমার মামলার কাজ এখানে চালাচ্ছে।’

এ ধরনের আচরণকে স্বাধীন বিচারের অন্তরায় উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমাকে এভাবে হেনস্থা ও অসম্মান করার প্রতিকার কোথায় পাব?

বিচার বিভাগের সঙ্গে সরকারের বিরোধ প্রকাশ্য হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বক্তব্য উদ্ধৃত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘বিচার বিভাগের হাত-পা বাঁধা। আর এ কারণে আমার মামলায় ন্যায়বিচার হবে কিনা তা নিয়ে মানুষের মনে সংশয় আছে’।

বক্তব্যের একপর্যায়ে বাকি বক্তব্য পরবর্তী সময়ে শেষ করতে তিনি আদালতের কাছে আজকের মতো শুনানির মুলতবি চান। আদালত খালেদা জিয়ার আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২৬ অক্টোবর পুনরায় শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১ লাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা বন্ডে জামিন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আকতারুজ্জামানের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিনে দুটি শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। শর্ত দুটি হলো-এক লাখ টাকা করে বণ্ডে দুই আইনজীবীকে জামিনদার থাকতে হবে ও বিদেশ যেতে চাইলে পূর্বেই আদালতের অনুমতি নিতে হবে।

গত ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলায়ই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন একই আদালত। ওই সময় বিএনপি চেয়ারপারসন চিকিৎসা নিতে লন্ডনে ছিলেন।

খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এছাড়া ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলায় অভিযোগ আছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাত করেন অভিযুক্তরা।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন, তৎকালীন মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

প্রসঙ্গত, টানা ৯৪ দিন দেশের বাইরে অবস্থান করে গতকাল দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর রাস্তায় হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা গ্রহণ করে রাত আটটার দিকে গুলশানস্থ বাসভবন ফিরোজায় পৌছান বেগম জিয়া।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.