ইমামের চোখে স্বাধীনতা পরবর্তী দুই ভুল

স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের সেনা সদস্যদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের সুযোগসহ দুটি বড় ধরণের ভুল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দিকে নিয়ে গিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে জেনারেল খালেদ মোশাররফের স্মরণসভায় এইচ টি ইমাম বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে দুটি জিনিস আমাদের অনেক পেছনে নিয়ে গেছে। তার একটি হলো, সেনাবাহিনীতে পাকিস্তান ফেরতদের আত্মীকরণ, যে কাজটি জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল ওসমানী মিলে করেছিলেন। আর দ্বিতীয়টি হলো, কর্নেল তাহের ও মেজর জলিলদের নিয়ে আসা। এই দুটো ভুল করা না হলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হতো না, দেশও অনেকদূর এগিয়ে যেত।’

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনাবাহিনীতে ঘটে যাওয়া হত্যাযজ্ঞের স্মরণে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফও সেদিন খুন হন।

অনুষ্ঠানে এইচটি ইমাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সেনা শাসক জিয়াউর রহমান দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তাকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক বলা হয়। তিনি যে দলগুলো গড়েছিলেন তা সভাপতি, সম্পাদক দিয়ে। ক্ষমতায় আসার পর তিনি মন্ত্রী বানিয়েছেন মান্নানের মতো রাজাকারকে, আব্দুল আলিম, শর্শিনার পীরের মতো লোককে। স্বাধীন হওয়ার পরও তিনি দেশে আবার পাকিস্তানি ভাবধারা প্রবেশ করালেন।’

জিয়াউর রহমানকে এইচটি ইমাম মুক্তিযোদ্ধা বলে মনে করেন না জানিয়ে বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বিহারির সন্তান। এছাড়া, তিনি সরসরি মুক্তিযুদ্ধে কখনই অংশ নেননি। সকল অপারেশন করেছে কর্নেল তাহের। মেজর জিয়া, খুনি মোস্তাক মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য নানা অভিনয় করেছেন। আর এখন সেই খলনায়কদের মহানায়ক বানানোর চেষ্টা চলছে।’

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন নয় মাসে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেননি, সে সময় তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করেছেন।’

জিয়া রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু সরকারের অধীনে যুদ্ধ করতে অস্বীকার করেছেন এমন অভিযোগ তুলে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘শুধু ১৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গেই জিয়া জড়িত নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন নয় মাসে বাংলাদেশের কোন ভূখণ্ডে তিনি একদিনের জন্যও পা রাখেননি।’

‘খালেদ মোশাররফ স্মৃতি পরিষদ’ আয়োজিত ‘৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যা দিবস’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার সহধর্মিনী সালমা খালেদ।