আপনি পড়ছেন

প্রধান বিচারপতি সুরন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২১ জন বিচারক প্রধান বিচারপতির পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাই একমাত্র প্রধান বিচারপতি যিনি এই প্রথম পদত্যাগ করলেন।

Surendra Kumar Sinha 2017

মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র আজ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’

এদিকে বঙ্গভবন থেকে পাঠানো এক চিঠিতে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার কথা জানিয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। গত শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতি এসকে সিহার দেশে ফেরার কথা ছিল। এ দিন তিনি দেশে না ফিরে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন।

২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এস কে সিনহা। বয়স অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে ৮১ দিন আগেই তার কার্যকাল শেষ হলো। দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের বিরাগভাজন হন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। গত ১ আগস্ট বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।

Chief Justice Surendra Kumar Sinhaবিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা [ফাইল ছবি]

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে এ রায় দেন। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের মূল রায়টি লেখেন প্রধান বিচারপতি। রায়ে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজ, রাজনীতি, নির্বাচন কমিশন ও সংসদ এবং সামরিক শাসন নিয়ে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেন।

রায় প্রকাশ হওয়ার পর সরকারের দায়িত্বশীল অনেকেই প্রধান বিচারপতির তীব্র সমালোচনা করেন। একপর্যায়ে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তুলেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেই পতত্যাগ করলেন এসকে সিনহা। আর একই সাথে সরকারের পক্ষ থেকে চলতি নভেম্বর মাসের মধ্যেই ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

রায়ের পর থেকে সরকারের পক্ষ থেকে চলমান সমালোচনার মধ্যে গত ২৭ আগস্ট থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি ছিল। ছুটি চলাকালীন সময়ে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি বিদেশ সফরে ছিলেন। কানাডায় অসুস্থ কন্যাকে দেখার জন্য এবং জাপানে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান বিচারপতিদের এক সম্মেলনে অংশ নিতে ওই ছুটিতে যান তিনি।

২৩ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরলেও ২ অক্টোবর পর্যন্ত আদালতে অবকাশকালীন ছুটি চলছিল। তবে ৩ অক্টোবর আদালত খুললেও হঠাৎ করে ফের এক মাসের ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি। প্রথম দফায় ছুটি কাটানোর পর দ্বিতীয় দফায় ৩ অক্টোবর থেকে প্রধান বিচারপতি’র ফের এক মাসের ছুটিতে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের মন্তব্য আসতে শুরু করে।

chief justice before leave dhakaদেশ ত্যাগের পূর্বে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এসকে সিনহা

চলমান আলোচনা-সমালোচনা মধ্যেই ১০ অক্টোবর ওই ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। অন্যদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, প্রধান বিচারপতি ক্যান্সার আক্রান্ত তাই তিনি ছুটিতে গেছেন। তবে সরকারের এ বক্তব্য নিয়ে নানা মহলে প্রশ্নের উদ্বেগ হয়। অন্যদিকে গত ১৩ অক্টোবর অষ্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগের আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি অসুস্থ্ নন। তার সম্পর্কে সরকারকে ভুল বোঝানো হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ায় তার বড় মেয়ে সূচনা সিনহার বাসায় বেশ কিছুদিন অবস্থান করার পর তিনি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটে আসেন। সেখানে চার দিন চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ১০ নভেম্বর, শুক্রবার দেশে ফেরার কথা ছিল ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার।  

কিন্তু তিনি কানাডায় যান। কানাডায় প্রধান বিচারপতি সিনহার কনিষ্ঠ কন্যা বসবাস করেন। অন্যদিকে নিজের অসুস্থতার কথা নাকচ করে দিয়ে দেশ ত্যাগের পরপরই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ‘গুরুতর’ ১১টি অভিযোগ তুলে ধরা হয়।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.