পার্থে যে সব বিস্ময়কর রেকর্ড গড়লেন স্মিথ

যতো সময় যাচ্ছে, ব্যাটসম্যান হিসেবে ততোই পরিণত হয়ে উঠছেন স্টিভ স্মিথ। একের পর এক রেকর্ড গড়ে বিস্মিত করে চলছেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক। ব্যাট হাতে তার মাঠে নামা মানেই এখন নতুন রেকর্ড নিয়ে ক্রিকেট সমর্থকদের ঘাঁটাঘাটি। সর্বশেষ অ্যাশেজের চলতি পার্থ টেস্টে স্মিথ এমন কিছু রেকর্ডের জন্ম দিয়েছেন, যা কেবল বিস্ময়ের মাত্রাই বাড়াবে।

পার্থ টেস্টে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন স্মিথ। আপাত দৃষ্টিতে এটাকে তেমন বড় কীর্তি মনে নাই হতে পারে। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার হলো এই ডাবল সেঞ্চুরি করার পথেই বেশ কিছু রেকর্ডের পাতায় ঝড় তুলেছেন তিনি। প্রথম রেকর্ড হলো— এটাই এখন পর্যন্ত স্মিথের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। তার আগের সেরা ছিলো ২১৫ রান, দুই বছর আগে লর্ডসে এই রান করেছিলেন তিনি। প্রতিপক্ষ ছিলো ইংলিশরাই।

২৩৯ রানের এই ইনিংসটি খেলার পথে টানা চার ক্যালেন্ডার বর্ষে অন্তত এক হাজার রান করার দারুণ রেকর্ড গড়েছেন স্মিথ। এই কীর্তিটা অবশ্য একক নয়; ম্যাথু হেইডেনেরও এমন কীর্তি আছে। তবে স্মিথ অনন্য হয়ে গেছেন অন্য জায়গায়। টানা চার বছরে এক হাজার করে রান করার পথে প্রতি বছরই তার রান ছিলো ৭০-এর উপর গড়ে! ম্যাথু হেইডেনের প্রথম তিন বছর গড় ছিলো ৫০-এর উপর। চতুর্থ বছরে গিয়ে তা নেমে আসে ৪৩-এ।

পার্থে ওয়াকায় চলতি টেস্টে স্মিথের করা ২৩৯ রানই এই মাঠের সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে ১৯৭০ সালে ১৭১ রান করেছিলেন ইয়ান রেডপাথ। এই ম্যাচে তাকে পিছনে ফেলেছেন স্মিথ। তাকে অবশ্য পিছনে ফেলেছেন মিচেল মার্শও। এই টেস্টেই তিনি করেছেন ১৮১ রান। মানে ইয়ানপাথ ৪৭ বছর ধরে যেখানে শীর্ষে ছিলেন, সেখানে একদিনেই তিন নম্বরে চলে গেলেন!

স্মিথ তার দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিটি করেছেন ৩০১ বলে। ৮০ বছরের মধ্যে এর চেয়ে কম বলে অ্যাশেজে কোনো ডাবল সেঞ্চুরি নেই কোনো অসি ব্যাটসম্যানের। স্মিথে ছোঁয়ায় ঘুম ভেঙে গেলো এই রেকর্ডের।

এই ডাবল সেঞ্চুরিতে আরো একটি একক রেকর্ড গড়েছেন স্মিথ। গত চার বছরে এটি তার ২০তম টেস্ট সেঞ্চুরি! চার বছরে এতোগুলো টেস্ট সেঞ্চুরি নেই কারো। এতোদিন চার বছরে সর্বোচ্চ ১৯টি সেঞ্চুরির কীর্তি ছিলো ম্যাথু হেইডেন ও রিকি পন্টিংয়ের। তাদেরকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন স্মিথ।

স্মিথের এতো সব রেকর্ডের পসরা সাজিয়ে বসার ম্যাচে হারের অপেক্ষায় ক্ষণ গুনছে ইংল্যান্ড। ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেডে হারের পর পার্থেও হার মানে দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই ইংলিশদের অ্যাশেজও হার। এই অ্যাশেজে আপাতত এটাই বোধহয় ইংলিশদের নিয়তি।