রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে ৩০ সদস্যের যৌথ কমিটি

মিয়ানমার থেকে প্রাণ ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে এক বৈঠকে ৩০ সদস্যের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেছ বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। বৈঠকে নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব ।

১৯ ডিসেম্বর, আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ কমিটি গঠন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মিন্ট থোয়ের। কমিটি গঠন শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, ‘চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। প্রত্যাবর্তনের জন্য শিগগিরই কাজ শুরু হবে।’

এর আগে গত ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে দেশটির স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী চ টিন্ট সোয়ে ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছিলেন।

স্মারকে দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো শুরু করার কথা বলা হয়েছিল। তবে কবে সেই প্রক্রিয়া শেষ হবে, তা নিয়ে কোন দিন তারিখ উল্লেখ ছিল না। তবে ওই চুক্তিতে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে একটি যৌথ কমিটি গঠন এবং দুই মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২৩ জানুয়ারি থেকে প্রত্যাবর্তন শুরু হওয়ার কথা ছিল।

গত ২৫ অাগস্ট স্বাধীন আরাকানের দাবিতে সংগ্রাম করে আসা আরসা সদস্যের হামলার জবাবে ঢালাওভারে রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে মিয়ানমার। তারপর থেকে রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্যের অন্তত ৩৫৪টি গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। প্রাণ ভয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়।

উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এর আগে আরও প্রায় ৩ লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে এসেছিলো। সব মিলিয়ে ১০ লাখেরও বেশি বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে অবস্থান করছে।