আপনি পড়ছেন

পাশ্চাত্য সংস্কৃতির আগ্রাসন ঠেকাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান। কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, প্রাথমিক শিক্ষায় ইংরেজি থাকলে পাশ্চাত্য সাংস্কৃতিক আগ্রাসন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসলামিক নেতাদের এমন উদ্বেগের কারণেই ওই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 

iran school

রোববার দেশটির সরকারি উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে দ্য গাডিয়ান  নিউইয়র্ক টাইমস। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির উচ্চতর শিক্ষা কাউন্সিলের প্রধান মেহদী নাভিদ আদহাম বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে পাঠ্যক্রমে ইংরেজি শিক্ষা আইন ও বিধি বিরোধী। প্রাথমিক শিক্ষা শিশুদের অধিকার, এটি ইরানের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করেই করতে হবে। তিনি জানান, পাঠ্যক্রম ছাড়াও শিশুদের বিভিন্ন ইংরেজি বইয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট জানায়, ইরানী সংস্কৃতি শিশুমনে প্রতিস্থাপনের জন্য প্রাথমিক স্তরে শিক্ষাব্যবস্থায় ইংরেজি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দেশটির রাষ্ট্রীয় ভাষা ফার্সি। দেশটিতে ছয় বছর বয়সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি শুরু হয়।

উচ্চতর শিক্ষা কাউন্সিলের প্রধান মেহদী নাভিদ আদহাম বলেন, ‘দেশের আইন মান্য করে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তরে ফার্সি ও ইরানি সংস্কৃতি প্রোথিত করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে ফার্সি ভাষা ও সাহিত্যের দিকে আকৃষ্ট করাতে হবে।’

iran youth

ইরানে সাধারণত মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলোতে ইংরেজি শিক্ষা শুরু করা হয়। যখন সাধারণত শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে থাকে। কিন্তু কিছু শিশু স্কুল খোলা থাকার সময়ে বিভিন্ন প্রাইভেট ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্সটিটিউটে ক্লাস করছে। এছাড়াও অনেক অভিভাবক ইংরেজি শিক্ষার জন্য বেসরকারিভবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের সন্তানদের ভর্তি করছেন।

দেশটির উচ্চ শিক্ষা কাউন্সিল সূত্রের বরাত দিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, ইরানে বর্তমানে উচ্চশিক্ষার পাঠ্যক্রমে বিদেশী ভাষা হিসেবে আরবি ছাড়াও ইতালিয়ান, জার্মানি, স্পেনিশ, রাশিয়া ও ফ্রেঞ্চ ভাষা প্রচলিত রয়েছে। 

২০১৬ সালে এক অনুষ্ঠানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, নার্সারি পর্যায়ে ইংরেজি শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। আমি কিন্তু ইংরেজি ভাষার বিরোধিতা করছি না। তবে এটি যুব সমাজকে ভিনদেশী সংস্কৃতিতে নিয়ে যাচ্ছে। কারণ, পাশ্চাত্য বুদ্ধিজীবীরা তাদের ঔপনেবেশিক চিন্তা বিভিন্ন দেশে পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে যুব সমাজ তাদের সংস্কৃতির প্রতি ঝুঁকে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হচ্ছে।’

ইরানের সরকার প্রাথমিক স্তর থেকে ইংরেজি শিক্ষা নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত এমন এক সময় নিয়েছেন, যখন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সারা দেশ উত্তাল। যদিও ইরানের সরকার এ বিক্ষোভকে বিদেশী শত্রুদের (ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের) কাজ বলে দাবি করছেন।

দেশটিতে বিক্ষোভে ইতোমধ্যে ২২ জন নিহত ও সহস্রাধিক বিক্ষোভকারী আটক হয়েছেন। আটকদের মধ্যে তেহরানি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ জন শিক্ষার্থীও রয়েছেন। দেশের প্রায় ৮০টি শহরে এ বিক্ষোভে হাজার হাজার যুবক অংশ নিয়ে তাদের বেকারত্ব, সরকারের দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ও ধনী-গরিবের বৈষম্যে বিরুদ্ধে প্রতিবাদি হয়েছেন।  বিক্ষোভের পর দেশটিতে সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ ও জনপ্রিয় মোবাইল অ্যাপ টেলিগ্রাম ব্লক করে দিয়েছে সরকার।

তবে সংস্কারবাদী এক রাজনীতিবিদ ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন, ‘বিক্ষোভের সঙ্গে ইংরেজি নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে এটি হতাশা বাড়াবে।  আর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাও সম্ভব নয়। কারণ, দেশের অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদেরকে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে ব্যাপক অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.