আপনি পড়ছেন

১৩ বছরের কিশোর শেখ সামিউল আলম রাজনকে হত্যার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে সারা বাংলাদেশ। অফলাইন ও অনলাইন, দুই মাধ্যমেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। গতকাল সারাদিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাজন হত্যার প্রতিবাদে মানুষ সরব হয়ে উঠে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকেও রাজনের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে অসংখ্য মানুষ স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

কোনো হত্যার প্রতিবাদে হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে এমন জোরালো প্রতিবাদ বাংলাদেশের ইতিহাসে খুব কমই হয়েছে। ফেসবুকে সেলিব্রিটি ও বিখ্যাত মানুষজন ছাড়াও নানা পেশার মানুষ এই রাজন হত্যার বিচার চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।

ফেসবুক থেকে রাজন হত্যার বিচার চেয়ে দেওয়া কয়েকজনের পোস্ট তুলে দেয়া হলো।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অপরিহার্য সদস্য টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম একটি ছবি পোস্ট করে লিখেন, “There can never be a worse crime than abusing an innocent child to death. Say no to child abuse!

একটি নিষ্পাপ শিশুকে নির্যাতন করে মেরে ফেলার মতো বড় অপরাধ মনে হয় আর নেই। শিশু নির্যাতনকে না বলুন!”

 

There can never be a worse crime than abusing an innocent child to death. Say no to child abuse!একটি নিষ্পাপ শিশুকে নির্যাতন করে মেরে ফেলার মতো বড় অপরাধ মনে হয় আর নেই। শিশু নির্যাতনকে না বলুন!

Posted by Mushfiqur Rahim on Monday, July 13, 2015

 

বিশিষ্ট আবৃত্তিকার শিমুল মুস্তাফা লিখেছেন, এই বর্বর প্রাণীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি আর কবিতা পড়ব না। এ প্রতিবাদটুকু আমি করলাম। কবিতা অসভ্য জাতির জন্য নয়। আমাদের তো ক্ষমতা নেই। আমি আমার মতো করে প্রতিবাদ করলাম। যতবার ভিডিওটি দেখেছি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। এটা কোনো সভ্য মানুষের কাজ না। চার দিন হয়ে গেল এখনো খুনীদের গ্রেফতার করা যায়নি। আমাদের কী বলার আছে? তাই আমার মতো আমি প্রতিবাদ করলাম।’ 

তাসিন নামে একজন তাঁর পোস্টে লিখেছেন, প্রতিদিন এমন হাজার হাজার রাজন মারা যায়। আমরা কেউ প্রতিবাদ করি না। এবার যেহেতু প্রতিবাদ শুরু হয়েছে, তাই এবার দেখা যাক কারা শক্তিশালী, আমরা নাকি রাজনের হত্যাকারীরা।’

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর নিউজ এডিটর লুৎফর রহমান হিমেল তাঁর পোস্টে লিখেন, ‘রাজনের ঘটনাটি ফেসবুক প্রথম সামনে এনেছে। এখন সবার প্রতিবাদ চলছে। এটা খুবই ইতিবাচক একটা দিক। অনেকে বলছেন, কি-বোর্ডে বিপ্লব করে কোনো লাভ নেই। আমি বলব, অবশ্যই আছে। কিছুদিন আগে ক্ষুদ্রঋণের একটি এনজিও কিস্তির টাকার জন্য দরিদ্র গ্রাহকের ঘর ভেঙে নিয়েছিল। ফেসবুকে ঝড় উঠলে ওই এনজিও সেটা ফেরত দিতে বাধ্য হয়। এ রকম অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যাবে। তাই বলব, কি-বোর্ড যেন না থামে। যেখানে অন্যায়, সেখানেই প্রতিরোধ। লেখা চলুক। বর্বরদের সামাজিকতা শেখানোর সামাজিক মাধ্যমই হোক হাতিয়ার। বেশি করে অপরাধীদের ছবি পোস্ট করুন, ভিক্টিমের ছবি দিবেন না দয়া করে। হৃদয় ভেঙে যায় নৃশংস দৃশ্য দেখলে।’  

তরুণ লেখক ও বিশ্লেষক জিয়া হাসান লিখেন, ‘এই শিশুটির হত্যার সাথে বাকি হত্যাগুলোর পার্থক্য হচ্ছে, এটা ভিডিও করা হয়েছে, বাকিগুলো ভিডিও করা হয়নি। সমাজে টাকার দেবতাকে সর্বজন গৃহীত ধর্মে পরিনত করে, মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নাজুক অবস্থায় এনে একটা সমৃদ্ধ অর্থনীতির গল্প ফেঁদে, সম্পূর্ণ বিচারহীনতার কালে রাষ্ট্রের, মানুষের, সমাজের সামগ্রিক অধঃপতনের প্রেক্ষাপটে এমন হত্যা প্রায়ই হচ্ছে। কেউ একজন ভিডিও করেছে বলে এই হত্যাটা আপনি দেখেছেন বাকি গুলো দেখতে পারছেন না। নাকি কান্না বন্ধ করুন। পুলিশ, আইন বিভাগ, স্কুল, প্রশাসন হতে শুরু করে সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিয়ম, শৃঙ্খলার এবং নাগরিকের প্রতি দায়বদ্ধতার জন্যে পরিবর্তন দাবী করুন। আপনি দাবী করলে, পরিবর্তন আসবে। আপনি রিএকশন দেখালে, আপনার প্রভুরা রিএকশন দেখিয়ে আপনাকে সন্তুষ্ট করবে। কোন পরিবর্তন আসবেনা। শুধু একটা হত্যার বিচার চাইবেন না। পুরো সিস্টেমের পরিবর্তনের দাবীতে, দায়বদ্ধতার দাবীতে, কার্যকারিতার দাবীতে সোচ্চার হোন, নইলে, একদিন আপনি ভিডিও হবেন।’

উল্লেখ্য, সিলেট সদর উপজেলার কুমারগাঁওয়ে দোকানের খুঁটির সাথে বেঁধে প্রায় দেড় ঘণ্টা নির্যাতন করে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে। নির্যাতনের সময় শিশু রাজন আর্তনাদ করে পানি খেতে চাইলেও নির্যাতনকারীরা তাঁকে পানি খেতে দেয় নি। শিশু রাজনকে হত্যার পুরো চিত্র ভিডিও করে হত্যাকারীদেরই একজন সহযোগী। এরপর তারাই এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়।

রাজনকে হত্যা করার পর গত বুধবার গুম করার সময় পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। উদ্ধারের দিন লাশটি অজ্ঞাত থাকলেও পরে তাঁর পরিবার রাজনের লাশ শনাক্ত করতে পারে। এরপরই মূলত রাজনকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় রাজনের লাশ ফেলার সময় হাতেনাতে আটক মুহিত ও তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে।

মামলার অন্যতম আসামি কামরুল ইসলামকে সৌদি আরবের জেদ্দায় আটক করা হয়েছে। শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যার একদিন পরই কামরুল সৌদি আরব চলে গিয়েছিলেন।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

হাসপাতালে রোগী দেখতে গুণতে হবে টাকা

রাজন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

থাকছে না পাঁচ টাকার ব্যাংক নোট

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.