বাংলাদেশের সামনে ৩৩৯ রানের পাহাড়

আট সেশনেরও বেশি সময়ের খেলা বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে দুই দলের তিন ইনিংস। যে ইনিংসটা বাকি, সেখানে বাংলাদেশের দরকার ৩৩৯ রান। করতে পারলে জয়। না করতে পারলে হার। আর যদি আট সেশনের বেশি ব্যাটিংয়ের মতো কিছু ঘটে, তাহলে ড্র। এই তিন সমীকরণের মধ্যে শেষটাকে অসম্ভব ছাড়া কিছু বলার নেই। বাকি দুইটার মধ্যে বাংলাদেশের হারের সমীকরণই বেশি বাস্তবসম্মত।

প্রথম ইনিংস শেষে একশ ১১২ রানের লিড পাওয়া শ্রীলঙ্কা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ২২৬ রানে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়িয়েছে ৩৩৯ রানের পাহাড়। এই পাহাড় ডিঙানোর কাজে বাংলাদেশকে নেমে পড়তে হচ্ছে তৃতীয় দিন লাঞ্চের আগেই।

মিরপুরে এতো রান চেজ করে জয়ের কোনো রেকর্ড নেই। এই ভেন্যুতে চতুর্থ ইনিংসে সফলতম চেজটা মাত্র ২০৯ রানের। ২০০-এর উপরের রান চেজ করার আর মাত্র একটাই রেকর্ড আছে। দুইটার কোনোটিই বাংলাদেশের নয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একবার ১০১ রান চেজ করার রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। সেটা করতেও হারিয়ে ফেলতে হয়েছিলো সাত উইকেট।

এই ইতিহাস বলছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি টেস্টেও বাংলাদেশের সম্ভাবনা প্রায় নেই-ই। এক দিকে স্পিনিং উইকেট, যেখানে ব্যাটসম্যানদের রীতিমত কাঁপাকাঁপি অবস্থা। অন্য দিকে শ্রীলঙ্কায় বিশ্বমানের সব স্পিনার। বাংলাদেশের করুণাবস্থাটা আন্দাজ করা যাচ্ছে এখানেই।

৩৩৯ রানের পাহাড় ডিঙানোর মিশনে নামার আগে বাংলাদেশকে কিছুটা গর্বের উপলক্ষ্য এনে দেন তাইজুল ইসলাম। শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নেন তিনি। তিন উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমন। বাকি তিন উইকেটের দুটি নেন মেহেদি হাসান। অন্য উইকেটটি শিকার করেছেন আব্দুর রাজ্জাক।

শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ৭০ রান করেন রোশেন সিলভা। প্রথম ইনিংসেও হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এর আগে, চট্টগ্রাম টেস্টে করেছিলেন সেঞ্চুরি। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রোশেন দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষের সংবাদ সম্মেলনে এসে বলে গেছেন, বাস্তবতা বলছে— এই টেস্টে বাংলাদেশের জেতা সম্ভব নয়। অন্য দিকে, মেহেদি হাসান মিরাজ, দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বলে গেছেন তাদের পক্ষে জেতা সম্ভব।

দুই দলের দুই ক্রিকেটারের বিপরীতমুখী অবস্থান আসলে তাদের দলের বিপরীতমুখী অবস্থানকেই স্পষ্ট করেছে। তৃতীয় দিনে এই স্পষ্টতা আরো পরিস্কার হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে এবং তাতে বাংলাদেশের অবস্থা যে ভালো হবে, সেই আশা বোধহয় পাঁড় কোনো ভক্তও করতে পারছেন না!