আবারও মুশফিকের বীরত্ব, কিন্তু হলো না!

১৭৭ রানের লক্ষ্যটা প্রাথমিকভাবে খুব বড় মনে হয়নি বাংলাদেশের কাছে। কারণ এক ম্যাচ আগেই তারা ২১৪ চেজ করে জিতেছে। সুতরাং ভারতের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস নিয়েই ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তামিম-সৌম্যরা। কিন্তু হলো না। মুশফিক আরো একবার তার টি-টোয়েন্টি দক্ষতার প্রদর্শনী দেখালেন বটে, কিন্তু অন্যদের ব্যর্থতায় তার বীরত্ব ম্লান হয়ে গেলো ম্যাচ শেষে। বাংলাদেশ হারলো ১৭ রানে।

বাংলাদেশ প্রথম ধাক্কা খায় ওয়াশিংটন সুন্দরকে মোকাবেলা করতে গিয়ে। আগের তিন ম্যাচে চার উইকেট নেয়া ওয়াশিংটন তার প্রথম ওভারে মাত্র চার রান দিয়ে তুলে নেন লিটন দাসকে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে এ দিন ওপেনিং করেন তিনি। কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি।

ওয়াশিংটন তার দ্বিতীয় ওভারে দেন পাঁচ রান এবং এবার শিকার করেন সৌম্য সরকারকে। তিন বলে এক রান করেন তিনি। তৃতীয় ওভারে গিয়ে ১৯ বলে ২৭ রান করা তামিমকে শিকার করেন তিনি। পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলে মোটে ৪৮ রান। ম্যাচে তাতেই ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।

তামিমের পর দ্রুত ফিরে যান মাহমুদুল্লাহও। যদিও পরপর দুই চার মেরে অন্য ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন অধিনায়ক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। তারপরও বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায়নি মুশফিক-সাব্বিরের পঞ্চম উইকেটের কল্যাণে।

এই জুটিতে ৬৫ রান যোগ করেন মুশফিক-সাব্বির। যা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেরা জুটি। বিগহিটিংয়ের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ সাব্বির ২৩ বলে ২৭ রান করে ফিরেন। অন্যপ্রান্তে আশার নিবু নিবু বাতি নিয়ে রান করতে থাকেন মুশফিক এবং টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।

শেষ তিন ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৪৯ রান। ১৮তম ওভারে আসে মাত্র আট রান। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজনটা কমে হয় ৩৩ রান। কিন্তু ১৯তম ওভারে শার্দুল ঠাকুর পাঁচ রান দিয়ে দলের জয় প্রায় নিশ্চিত করে দেন শার্দুল ঠাকুর। শেষ ওভারে তখন বাংলাদেশের দরকার ২৮ রান।

সিরাজের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন মুশফিক। পরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। শেষ চার বলে তখনও বাংলাদেশে দরকার ২৭ রান। কিন্তু পরের চার বলে আসে সব মিলিয়ে নয় রান। অর্থাৎ শেষ ওভারে ১০ রান নেয় বাংলাদেশ এবং ম্যাচটা বাংলাদেশকে হারতে হয় ১৭ রানে। মুশফিক ৭২ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে ভারত ২০ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে। সর্বোচ্চ ৮৯ রান আসে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাট থেকে। আগের তিন ম্যাচে সুবিধা করতে না পারা রোহিত জ্বলে ওঠেন এই ম্যাচে এবং দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন তিনি।

বাংলাদেশের হয়ে এ দিন উইকেট পান কেবল রুবেল হোসেন। শেখর ধাওয়ানকে প্রথমে ফেরান তিনি। পরে পান সুরেশ রায়নার উইকেটও। কিন্তু অন্য বোলাররা ছিলেন নির্বিষ। বিশেষ করে মোস্তাফিজ ও আবু হায়দার হতাশ করেন। এ দুজন যথাক্রমে ৩৮ ও ৪৩ রান দেন। উইকেট পাননি কেউই। রুবেলের সঙ্গে অন্যেরা সুবিধা করতে পারলে হয়তো ১৭৬ রানের মতো চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেতো না ভারত।

বাংলাদেশি বোলাররা সুবিধা করতে না পারলেও ভারতের বোলাররা ছিলেন দুর্দান্ত। বিশেষ করে ওয়াশিংটন সুন্দর। চার ওভারে ২২ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। মোহাম্মদ সিরাজ, শার্দুল ঠাকুর ও যুজবেন্দ্র চাহাল একটি করে উইকেট নেন।

এই হারের পরও অবশ্য বাংলাদেশের ফাইনাল খেলার সুযোগ থাকছে। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে পারলেই মিলবে ফাইনালের টিকিট। যে টিকিট আজ পেয়ে গেলো ভারত।