আইসিসির বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত, বদলে যাচ্ছে ক্রিকেটের মানচিত্র

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল যদি পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়ে ফুটবল খেলতে নেমে যায়, তাহলে উপমহাদেশের ফুটবল সমর্থকদের রক্তচাপ বেড়ে যায় মুহূর্তেই। কদিন বাদে এ রকম হতে পারে দুই দেশের ক্রিকেট লড়াইয়েও!

না, এই রকম চিন্তা এখন আর কেবলই কল্পনা নয়। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) এক বৈপ্লবিক সিদ্ধান্তে খুলে যাচ্ছে ক্রিকেটের নান সম্ভাবনার দুয়ার। আইসিসি তার সব সদস্য দেশকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি স্ট্যাটাস দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাচ যেমন আন্তর্জাতিক, তেমনি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বা মেক্সিকো-পানামার ম্যাচও আন্তর্জাতিক হয়ে যাবে।

এতোদিন টি-টোয়েন্টি স্ট্যাটাস ছিলো মাত্র ১৮টি দেশের। এর মধ্যে ১২টি দেশ আইসিসির পূর্ণাঙ্গ সদস্য। সহকারী দেশের মধ্যে ২০ ওভারের ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক মর্যাদা ছিলো কেবল আরব আমিরাত, নেপাল, নেদারল্যান্ডস, স্টকল্যান্ড, ওমান ও হংকংয়ের।

আইসিসির নতুন সিদ্ধান্তে এখন থেকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মর্যাদা পেয়ে গেলো আরো ৮৬টি দেশ। সব মিলিয় এখন টি-টোয়েন্টির দল সংখ্যা হলো ১০৪। এ দেশগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া যে কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ এখন থেকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মর্যাদা পাবে।

আইসিসি জানিয়েছে, এ বছরের জুলাই মাসের এক তারিখ থেকে ১০৪ সদস্য দেশের সবগুলোর নারী দল টি-টোয়েন্টি স্ট্যাটাস পেয়ে যাবে। আগামী বছরের প্রথম দিন থেকে একই মর্যাদা পাবে সব দেশের পুরুষ দল।

আইসিসির এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবেই বদলে দিতে ক্রিকেটের মানচিত্র। যে সব সদস্য দেশ এতোদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য মুখিয়ে থাকতো, তারা এখন নিজেদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করতে পারবে। ফলে মূল সারির ১৮ দেশের বাইরের দেশগুলোও এখন ক্রিকেটের প্রতি আরো মনোযোগী হবে।

ক্রিকেটের বিশ্বায়নে আইসিসি নিজেই একটা বড় বাধা— এতোদিন এ রকম সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে আইসিসিকে। হয়তো এ কারণেই এবার এমন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিলো ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা। ক্রিকেটের সত্যিকারের বিশ্বায়ন সম্ভবত শুরু হয়ে গেলো এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই।

যে সব দেশ টি-টোয়েন্টি স্ট্যাটাস পেতে যাচ্ছে

আফ্রিকা: বতসোয়ানা, ক্যামেরুন, গাম্বিয়া, ঘানা, কেনিয়া, লেসোথো, মালাউই, মালি, মরক্কো, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, নাইজেরিয়া, রাওয়ান্ডা, সেশেল, সিয়েরা লিওন, সেইন্ট হেলেনা, সোয়াজিল্যান্ড, তানজানিয়া, উগান্ডা, জাম্বিয়া।

আমেরিকা: আর্জেন্টিনা, বাহামাস, বেলিজ, বার্মুডা, ব্রাজিল, কানাডা, কায়মান আইল্যান্ড, চিলি, কোস্টারিকা, ফকল্যান্ড আইল্যান্ড, মেক্সিকো, পানামা, পেরু, সুরিনাম, টার্কস অ্যান্ড কেইকোস আইল্যান্ডস।

এশিয়া: বাহরাইন, ভুটান, চায়না, ইরান, কুয়েত, মালয়শিয়া, মালদ্বীপ, মায়ানমার, কাতার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড।

এশিয়া প্যাসিফিক: কুইক আইল্যান্ডস, ফিজি, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, পাপুয়া নিউগিনি, ফিলিপাইন, সামোয়া, দক্ষীণ কোরিয়া, ভানুয়াটু।

ইউরোপ: অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, সাইপ্রাস, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, ইস্টোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, জিব্রাল্টার, গ্রিস, গার্নসি, হাঙ্গেরি, আইল অব ম্যান, ইসরায়েল, ইতালি, জার্সি, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নরওয়ে, পর্তুগাল, রোমানিয়া, রাশিয়া, সার্বিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন ও তুরস্ক।