দল পর্যালোচনা: ইতিহাসের ধারায় জাপান
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
ফুটবলের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। কয়েকশ বছর আগেও ফুটবল খেলা হতো বিশ্বের অনেক দেশেই। তবে ছিল না কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। ছিল না কোনো সংগঠনও। অনেকের মতে ১৯০৪ সালে গঠিত হওয়া ফিফা-ই ফুটবলের প্রথম সংগঠন। কিন্তু ফুটবলের অতীত ইতিহাস ঘাঁটলে নথিপত্রে জাপান ফুটবলের নামটা সামনে চলে আসবে।
দাবি তুলতে পারে ব্রিটিশরাও। প্রাচীন চীন এবং রোম সাম্রাজ্যেও কম-বেশি ফুটবল চর্চা হতো। সেটা ঠিক ফুটবল দিয়ে নয়। গোলাকার এক ধরণের বস্তু দিয়ে খেলা হতো ফুটবল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ফুটবলের উৎপত্তি কোথায় হয়েছে এই প্রশ্নের উত্তরের বিতর্কটা বহু বছরের পুরনো।
তবে ইতিহাস যতই পুরনো হোক না কেন জাপানের ফুটবল কখনোই সমৃদ্ধ ছিল না বিশ্বমঞ্চে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য ২০০১ কনফেডারেশনস কাপে রানার্সআপ হওয়াটা। তবে বৈশ্বিক আসরে না পারলেও এশিয়া মহাদেশে রীতিমতো পরাশক্তি হয়ে উঠেছে জাপানিজরা। এই দলটাকে এশিয়ার ব্রাজিলও বলা হয়ে থাকে। সামুরাইয়ের দেশ জাপান এএফসি এশিয়ান কাপে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন। তবু জনপ্রিয়তার দিক থেকে জাপানে ফুটবলের অবস্থান তৃতীয়!
১৯২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (জেএফএ) যাত্রা শুরু করে। একই বছর ফিফার সদস্যপদ দেওয়া হয় এশিয়ান দলটিকে। অথচ বিশ্বকাপে খেলার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ৭৭ বছর পর্যন্ত! ১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপ দিয়েই বিশ্বমঞ্চে অভিষেক ঘটে সামুরাই ব্লুদের। তাদের অভিষেক হতো পারতো আরো চার বছর আগে। কিন্তু বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে ইরাকের সঙ্গে ড্র করে কপাল পুড়ে জাপানের।
জাপান স্বপ্নের মঞ্চে উঠতে পারতো ১৯৫০ সালেই। কিন্তু ফিফার নিষেধাজ্ঞার বলি হয় জাপানিজদের ব্রাজিল বিশ্বকাপ স্বপ্ন। তারও এক যুগ আগে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় জাপান। শেষ পর্যন্ত কয়েক দশক পর বাছাইপর্বের গণ্ডি পেরিয়ে ফ্রান্সের আসরে জায়গা করে নেয় এশিয়ান জায়ান্টরা।
নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে তাদের পারফরম্যান্স নজর কেড়েছিল ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার জন্য সেটা যথেষ্ঠ ছিল না। বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে গেলেও নিজেদের শক্তির জানান জাপান দিয়েছিল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের নয় নাম্বারে উঠে এসে! পরেরবার দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বকাপের আয়োজন করে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে জায়গা করে নেয় জাপান। তবে আরেক স্বাগতিক দক্ষিণ কোরিয়ার স্বপ্নাযাত্রা থেমেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে।
অভিষেক আসরসহ সর্বমোট পাঁচটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল জাপান। কিন্তু বিশ্বকাপে তাদের ফুটবল ইতিহাস বড্ড বৈচিত্র্যময়। এক আসরে গ্রুপপর্বে তারা বিদায় নেয় তো পরেরবার ঠিকই দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে জাপান। সবশেষ ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে গ্রুপপর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছিল তারা। ইতিহাসের ধারা অব্যাহত থাকলে এবার অন্তত নক আউট পর্বে ওঠার কথা জাপানের।
তবে কাজটা মোটেও সহজ নয়। কারণ আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপে ‘এইচ’ গ্রুপে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কলম্বিয়া, পোল্যান্ড, ও সেনেগাল। প্রথম দলটির বিপক্ষের ম্যাচ দিয়ে এবারের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে জাপান। আগামী ১৯ জুন রাশিয়ার মঞ্চ সারানস্কে নিজেদের প্রথম ম্যাচটি খেলবে নীল সামুরাইরা।
জাপান ফুটবলের সাম্প্রতিক বছরের সময়টা অবশ্য ভালো যাচ্ছে না। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৫৫ নাম্বারে নেমে গেছে তারা। এর দায় হিসেবে বারবার জাপানিজ ফুটবলকর্তারা বলির পাঁঠা বানাচ্ছেন কোচদের। গত ১১ বছরে সাতবার কোচ পাল্টেছেন তারা। এমনকি রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট এনে দেওয়া বসনিয়ান কোচ ভাহিদ হালিলহোলজিদকেও অব্যাহতি দিতে পিছপা হননি জাপানিজরা। আসন্ন বিশ্বকাপটা জাপান শুরু করবে নতুন কোচ আরিরা নিশিনোর অধীনে। জাপানিজ কোচের অবশ্য এখনো অভিষেকই হয়নি নিজ দেশের ডাগ আউটে।
নতুন কোচ নিশিনোর জন্য চ্যালেঞ্জটা তাই একটু বেশিই। তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বেশ কজন প্রতিভাবান ফুটবলার পাচ্ছেন তিনি। আসরে তার তুরুপের তাস অভিজ্ঞ তারকা ফুটবলার কেইসুকে হোন্ডা। গত বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকের আসরে দ্যুতি ছড়ানো ইয়োশিদোর দিকেও থাকবে স্পট লাইটটা।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.