'খাল উদ্ধারে গেলে সরকারও উল্টে যেতে পারে'

আসছে বর্ষাকালে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিয়ে চিন্তিত নগরবাসী। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকার খালগুলো উদ্ধার এবং চারপাশে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনলে জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব। এদিকে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা মনে করেন ঢাকার খালগুলো প্রভাবশালীরা দখল করে রাখায় তা উদ্ধার করা সম্ভব নয়। এসব উদ্ধার করতে গেলে সরকারও পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।'

আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম অংশীদার ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশা রোববার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, 'অনেক প্রভাবশালী লোকের হাতে ঢাকার খালগুলো দখল হয়ে আছে। সরকার হয়তো পরিবর্তন হয়ে যাবে কিন্তু খাল পাবেন না। ওই একটা খালের জন্য সরকার পরিবর্তনের ঘটনাও ঘটতে পারে।'

ঢাকার জলাবদ্ধতার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখল হওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যেও বিভিন্ন সময় এসেছে। তবে সেগুলো উদ্ধার করা যায়নি। এর মধ্যে সিপ ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় খাল উদ্ধারে বেশ সংশয়ের কথা জানালেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য বাদশা।

'খাল উদ্ধারে গেলেই সরকার কি পরিবর্তন হয়ে যাবে?' গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নের জবাবে বাদশা বলেন, 'হ্যাঁ। আমি এমন আশঙ্কার কথাই বলছি। আপনারা সকলেই জানেন, দেশে সরকারের পর সরকার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু একটা বিল্ডিং ভাঙ্গা সম্ভব হয়নি।' তবে রাজধানীর জলাবদ্ধতার সমস্যা দূর করতে খাল উদ্ধারের বিকল্প নেই বলেও জানান বাদশা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা বলেন, 'রাজধানীর ৪৩টি খাল যদি পুনঃখনন করি, ড্রেজিং করি, খালগুলো দখলমুক্ত করি- তাহলেই নগরীর সমস্যার সমাধান হবে।' এসব প্রজেক্ট সেনাবাহিনীকে দিয়ে করালে সমস্যার সমাধান হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মো. বেলাল বলেন, 'আইনে আছে ডোবা, নালা, খাল, বিল দখল করা যাবে না। তবে সেটা কার্যকর হচ্ছে না। কোনো না কোনোভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে বা আছে।'

ঢাকা ওয়াসার পরিচালক প্রকৌশলী একেএম শহিদ উদ্দিন বলেন, 'ড্রেনেজ ব্যবস্থা যদি একটি সংস্থার মধ্যে রাখা যায় তাহলে জলাবদ্ধতা কমবে। কিন্তু এখন আছে পাঁচ সংস্থার হাতে। তবে পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমরা উন্নতি করতে পেরেছি।'

রোববারের আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পাল, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মতিন আব্দুল্লাহ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ প্ল্যানার্স ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক আদিল মোহাম্মদ খান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ওরলা মারফি, ডিএসসিসি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সুরাইয়া বেগমসহ আরো অনেকে।