আপনি পড়ছেন

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত প্রকাশ করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন একই হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী। অভিযোগকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।

anti quota movement is on again 11 april

তাদের আনা অভিযোগ আমলে নিয়ে এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আকবর হোসেনকে হলের দায়িত্ব থেকে সাময়িক অবসরে পাঠিয়েছে এবং অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কলা অনুষদের ডিন ড. জিএম মনিরুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে ১৫ জুলাই গঠন করা হয়েছে ওই কমিটি। চার সদস্যের কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার পূর্বে তার সমালোচনা করে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ফেসবুকে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা চাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মাজেদ। তার ওই মন্তব্যের পরই শিক্ষকের বিরুদ্ধে 'রাষ্ট্রদ্রোহিতা'র মতো গুরুতর অভিযোগ তুলে প্রভোস্ট বরবার লিখিত অভিযোগ করেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগের ওই অভিযোপত্রে বলা হয়েছে, গত ৩ জুলাই কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ আকবর হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দেশ বিরোধী চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা আকবরের অপরসারণ চায়। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের স্বাক্ষরযুক্ত ওই আবেদন পাওয়ার পরে হল প্রভোস্ট তা উপাচার্যের নজরে আনেন এবং কোনো রকম তদন্তের আগেই ওই শিক্ষককে হাউজ টিউটরের দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

মোহাম্মদ আকবর হোসেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারকে বলেন, 'সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। কোটা আন্দোলন সারাদেশের শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক আন্দোলন। অনেক শিক্ষকই এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন। আমি সেখানে ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর শেয়ার করেছি এবং আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার কিছু ছবি তুলে ধরেছি। আমার এই মত প্রকাশকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দেশদ্রোহিতা বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।'

তদন্ত প্রক্রিয়া ও এর বর্তমান অবস্থা জানতে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. জিএম মনিরুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মাদ কামাল উদ্দিন টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারকে বলেন, 'তার (আকবর হোসেন) বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ এসেছে। তদন্ত কমিটি তা তদন্ত করে দেখবে। তবে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তদন্ত করার পূর্বেই কোন সিদ্ধান্ত নেওয়াটাকে আমি ভাল কিছু মনে করি না।'

এ দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, 'আগামীতে কমিটিতে ভাল পদ পেতে ছাত্রলীগের নেতারা মরিয়া হয়ে আছেন। তারা যাকে পাচ্ছেন তাকেই কোটা ইস্যুতে হামলা কিংবা মামলা বা এ ধরণের অভিযোগ এনে নিজেদের নাম গণমাধ্যমে আলোচিত করার চেষ্টা করছেন।'

কিন্তু এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, 'আমি অনেক আগে থেকেই ওই শিক্ষকের সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলে আসছি। এর আগে আমি ফেসবুক লাইভে এসেও তার বিষয়ে কথা বলেছি।'

মাজেদ আরো বলেন, 'তিনি নীল দলের শিক্ষক। সরকারের কাছ থেকে তিনি একদিকে সুবিধা নেন অন্যদিকে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উস্কানিমূলক প্রচারণা চালান। শুধু কোটা ইস্যুতে না তিনি বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার বিরোধী কথা বলে আসছেন।'

সরকার বিরোধী কথা বললে তা রাষ্ট্রবিরোধী অভিযোগ হয়ে যায় কি না এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'সরকারের সমালোচনা যে কেউই করতে পারে, কিন্তু তিনি সরকারের সুবিধা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উষ্কানিমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছেন। তাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।' 

উপাচার্য অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারকে এ প্রসঙ্গে বলেন, 'অভিযোগ এসেছে, আমি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্টটি আসুক তারপরে আমি দেখবো।'

তদন্ত করার আগেই হাউজ টিউটরের দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'অযাচিত হস্তক্ষেপ যাতে না হয়, তদন্ত কমিটি যেন ঠিকভাবে কাজ করতে পারে এ জন্য তাকে আমরা সাময়িক বরখাস্ত করেছি।'

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত লেখার সূত্র ধরে এভাবে অভিযুক্ত হওয়া মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ কী না, এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, 'প্রভোস্ট অফিস থেকে অভিযোগ এসেছে। আমরা তো কোন সিদ্ধান্ত নেই নাই। অভিযোগটা আমি খতিয়ে দেখতে বলেছি। অভিযোগ তো আনতেই পারে। এখন তদন্ত রিপোর্ট না পেলে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে দেওয়া যায় না।'

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.