বছরে তিনমাস সুন্দরবনে পর্যটক নিষিদ্ধ!

বছরে তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটক নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বনবিভাগ। জুন, জুলাই, আগস্ট এই তিন মাস বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুমের কারণে সুন্দরবনে সব ধরণের পর্যটক নিষিদ্ধ করতে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তারা। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে আগামী বছর থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হতে পারে জানিয়ে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘প্রজনন মৌসুমে সব ধরণের পর্যটন নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্বখ্যাত বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা ও মায়া হরিণসহ বনের প্রায় ৩৭৫ প্রজাতির বণ্যপ্রাণীর প্রজনন নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ। এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ (বাগেরহাট) থেকে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষকের মাধ্যমে প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) -কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

পৃথিবীর বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বনে বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও বংশ বিস্তারের লক্ষ্যে প্রজনন মৌসুমের তিন মাস পর্যটন নিষিদ্ধ করার একটি প্রস্তাব গত মাসে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরীর কাছে পাঠিয়েছে বাগেরহাট অফিস। এ বিষয়ে সিএফ মো. আমির হোসাইন চৌধুরী জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময় পর্যটন নিষিদ্ধের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ‘ইউনেস্কো’ কর্তৃক ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড (বিশ্ব ঐতিহ্য) হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত এই বনের আয়তন ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটর। বনটির কিছু অংশ ভারতে এবং কিছু অংশ বাংলাদেশের সীমার মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশ অংশে বাঘ, হরিণ, বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতী ডলফিন, লোনা পানির কুমির, বন্য শুকর ও উদবিড়ালসহ ৩৭৫ প্রজাতির প্রাণী আছে বলে জানা যায়।

তবে ইতোমধ্যেই এখান থেকে বিলুপ্ত হয়েছে দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গন্ডার এবং এক প্রজাতির মিঠা পানির কুমির ও বন্য মহিষ। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস সুন্দরবনের বাঘ ও হরিণসহ বহু সংখ্যক বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম। কিন্তু এ সময়ে প্রচুর সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতির কারণে বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও প্রজন ব্যহত হচ্ছে। ফলে বন্যপ্রাণীর বংশ বিস্তারে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।