৩৫ নয়, ৩২ হচ্ছে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা!

দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য আন্দোলন হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে সাধারণ বয়স ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩২ করার উদ্যেগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবও তৈরি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য খুব শিগগিরই মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। তবে বাড়ছে না অবসর গ্রহণের বয়সসীমা।

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর আন্দোলনেও গতি এসেছে। আন্দোলনকারীরা চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরে উন্নীত করার দাবি করে আসছেন। কিন্তু এতদিন তাতে ভ্রুক্ষেপ না করলেও শেষ সময়ে এসে বয়সসীমা দুই বছর বাড়াতে যাচ্ছে সরকার।

জনপ্রশাস মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ এরই মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন তা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হচ্ছে। তিনি সম্মতি দিলে মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। তবে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছরই থাকছে, তা বাড়ানোর আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই সরকারের।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান, চাকরিতে প্রবেশের সাধারণ বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩২ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে সার্বিক বিবেচনায় সরকার চাইলে তা আরও বাড়াতে পারে।

বর্তমানে বিশেষ কোটায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বছর বিদ্যমান রয়েছে। তাদের এ বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাবে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ নয়, ৩৫ বছর করতে হবে। দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স ৩৫ করা হয়েছে। তাছাড়া প্রতিবেশিসহ বিভিন্ন দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা হয়েছে। কোনো দেশে এর চেয়েও বেশি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ২০১১ সালেই এ বয়সসীমা ৩২ করা উচিৎ ছিল। এখন এটি বাস্তব সম্মত নয়।

তবে চাকরিতে প্রবেশের সাধারণ বয়স বাড়ানোর বিরোধিতা করছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। তার মতে, এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট নেই। তাছাড়া বেশি বয়সে চাকরিতে ঢুকলে ভালো ফল বয়ে আনবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ২৭ বছর ছিল। ১৯৯১ সালে তা বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়। তারপর এখন পর্যন্ত এ বয়সসীমা না বাড়ানো হলেও ২০১১ সালে সরকারি সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স ২ বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে এক বছর বাড়িয়ে ৬০ করা হয়।