বন্যাদুর্গত গবাদিপশুদের জন্য ত্রাণ

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখে গবাদিপশু। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের পাশাপাশি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রাণীগুলোও। দুর্গত এলাকার মানুষেররা ত্রাণ সহয়তা পেলেও উপেক্ষিত থেকে মানুষের উপকারি প্রাণীগুলো। এবার তাই ‘FAO SFERA-Special Fund for Emergency and Rehabilitation’ প্রকল্পের বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে বেলজিয়াম রাজ্য সরকার কর্তৃক ‘বাংলাদেশের বন্যাদুর্গত ক্ষুদ্র-কৃষকদের গবাদিপশুর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অধীনে গবাদি পশুদের জন্য ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়। যা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও FAO ECTAD বাংলাদেশ যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটির অধীনে লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় বন্যাদুর্গত ক্ষুদ্র-কৃষকদের গবাদিপশুর জন্য এ ত্রাণ বিতরণের করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: রইছউল আলম মন্ডল, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা: হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক এবং এফএও বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডেভিড ডব্লিউ ডোলান।

প্রকল্পের আওতায় দেশের ১৬টি জেলা ও ৫৫টি উপজেলার প্রায় ৮ হাজার ১০৬ জন বন্যাদুর্গত ক্ষুদ্র-খামারীর মাঝে গবাদিপশুর খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। যেখানে প্রত্যেক কৃষক ৭৫ কেজি গো-খাদ্য (২৫ কেজির ৩ টি বস্তা) এবং ১২টি করে কৃমিনাশক ঔষধ পেয়েছেন। এ পর্যন্ত সর্বমোট ৬০০ টন গো-খাদ্য ও ৯৬০০০ কৃমিনাশক ঔষধ বিতরণ করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যনুযায়ী, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে বিগত চার দশকের চেয়েও সবচে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। সরকার এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে তিন লাখেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রদান করা হয়েছে ত্রাণ সহায়তা।

ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রাণীদের ত্রাণ সুবিধার আওতায় আনা প্রয়োজন। কারণ এ সকল গবাদিপশু একদিকে যেমন খাদ্য এবং প্রাণীজ প্রোটিনের উৎস হিসাবে কাজ করে, অন্যদিকে গ্রামীণ দরিদ্র কৃষক প্রচলিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মূলধন সঞ্চয়ের পরিবর্তে গবাদিপশু পালনে বিনিয়োগ করেন। দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারীদের কাছে গবাদিপশুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও বন্যাদুর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত গবাদিপশুর জন্য খুব সামান্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।