এক গরু নিয়ে বিপাকে ময়মনসিংহ প্রশাসন!

একটি গরুর মালিক খুঁজতে গিয়ে রীতিমত ঘাম ছুটছে ময়মনসিংহ প্রশাসনের। জানা যায়, তিন মাস আগে নান্দাইল থানা হেফাজতে আসে সাদা রঙের একটি গরু। এলাকার দুই কৃষক এটির মালিকানা দাবি করেন। এ নিয়েই যত বিপত্তি, শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি। তবুও সমাধান দূরাশাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন মাস আগে থানা হেফাজতে আসা গরুটির মালিকানা দাবি করেন উপজেলার কৃষক আব্দুল গনী ও হুমায়ুন মিয়া। প্রথমে থানার লোকজন দুজনের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন।

বিষয়টি আদালতে গড়ালে আদালত থানা পুলিশ এবং উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্তের প্রতিবেদন আসে পরস্পর বিরোধী। পুলিশের প্রতিবেদন বলছে গরুটি আব্দুল গনীর। আর প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার প্রতিবেদন বলছে, গরুর মালিক হুমায়ুন মিয়া। দুই কর্মকর্তাই নিজেদের প্রতিবেদন সঠিক বলে দাবি করেছেন।

এই দ্বিমুখী প্রতিবেদনের কারণে গরুর সঠিক মালিক খুঁজে পাওয়া আরও জটিল হলো বলে মনে করছেন ময়মনসিংহ জজ কোর্টের আইনজীবী শিব্বির আহমেদ লিটন। তিনি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে যখন দুই জায়গা থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন আসে তার মানে বিষয়টি আরও জটিল হতে চলছে।’

এদিকে থানা হেফাজতে থাকা গরুটি নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় লালন-পালনের দায়িত্ব নিতে হয়েছে তাদের। রুটিন বদলে প্রতিদিন একজন কনস্টেবল গরুটির দেখভাল করছে।

অনুমান করা হচ্ছে, গরুটির বাজার মূল্য হবে ২৬ হাজার টাকা। তবে মামলা মোকদ্দমায় উভয়পক্ষ খরচ করেছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা।

নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, ‘পুলিশ প্রতিটা স্তরে গিয়ে তদন্ত করে দেখেছে গরুর মালিক আব্দুল গনী। তাদের প্রতিবেদনে ভুল নেই বলেও দাবি করেন এই কর্মকর্তা।’

নান্দাইল প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মলয় কান্তি মোদক বলছেন, ‘পুলিশ গরুর কী বুঝে। আমরা এই বিষয়ে পড়াশোনা করেছি আমাদের তদন্তই সঠিক।’

পুলিশ ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের বিপরীতমুখী বক্তব্যের মাঝে দুই মালিকও বিপরীতমুখী বক্তব্য দিচ্ছেন। আব্দুল গনী জানান, তিনি প্রায় এক বছর ধরে গরুটি লালন পালন করছেন। পুলিশও তদন্ত করে সেটাই নিশ্চিত হয়েছে।

এদিকে হুমায়ুন মিয়া জানান, ‘বেশ কিছুদিন আগে তার গরু হারিয়ে গিয়েছিল। এখন সেটি তিনি খুঁজে পেয়েছেন।’