নেতাকর্মীদের স্লোগানে উত্তাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নেতাকর্মীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই জনসভা দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এর আগেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে উদ্যানসহ এর আশাপাশের এলাকা। এখনো বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে জনসভাস্থলের দিকে আসছেন জোটের নেতাকর্মীরা।

নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশিরভাগই ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপির নেতাকর্মী। তাদের স্লোগানে রয়েছে- শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ইত্যাদি।

ভোর থেকেই উদ্যানে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। এরপর সকাল থেকে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে উপস্থিতির সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এদের মধ্যে একটি বড় অংশ হচ্ছে ঢাকার সংসদীয় আসনভিত্তিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনী শোডাউন। তাদের সঙ্গে আনা খালেদা-তারেকের ছবিযুক্ত ব্যানার-প্লাকার্ড ও স্লোগানে এই দুই নেতার মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।

রাজধানীতে ঐক্যফ্রন্টের প্রথম এই জনসভায় উদ্যানজুড়ে শুধু কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থান করা দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ও প্রতিকৃতি শোভা পাচ্ছে। এছাড়া ব্যানার, ফেস্টুন, প্রতিকৃতি, পোস্টার, ব্যাজ ও পট্টিতে- সর্বত্রই দলটির এই দুই নেতার উপস্থিতি। এতে দলটির শীর্ষ দুই নেতার মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।

জোটের পক্ষ থেকে আগেই এ জনসভাকে স্মরণকালের সমাবেশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। দারি পক্ষে জনসমর্থনের ব্যাপ্তি দেখানো হবে এ কর্মসূচির মাধ্যমে। এছাড়া এখান থেকে নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা, গণফোরাম সভাপতি ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। আর প্রধান আলোচক হচ্ছেন যুক্তফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভার কর্মসূচি শুক্রবার ঘোষণা করা হয়। এতে বড় ধরনের শোডাউন করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছে বিএনপি। এ জনসভার মাধ্যমে দাবির পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন থাকার বিষয়টি প্রমাণ করার চেষ্টা করবে বিরোধী এ জোট।

এর আগে গতকাল সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৪ শর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে জনসভা করার অনুমতি দেয়া হয়। গতকাল দুপুর ১২টায় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলকে অনুমতির বিষয়ে অবহিত করেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

এরপর গতকাল বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে দলটির নেতারা জনসভার মাঠ পরিদর্শন করেন। এ সময় আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা হবে এটি। এতে যোগ দিবে ঢাকাসহ পাশবর্তী জেলার বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর আগে সিলেট ও চট্টগ্রামে জনসভা করেছে। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভাটি হবে তাদের তৃতীয় জনসভা। আগামী ৯ নভেম্বর রাজশাহীতে জনসভা করার জন্য অনুমতি চেয়েছে ঐক্যফ্রন্ট।