দেশে ফিরে 'গুম আতঙ্কে' সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলন!

বিগত চার দলীয় জোট সরকারের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন। গত পাঁচ বছর তিনি দেশের বাইরে থাকলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন। মিলনের স্ত্রী নাজমুন্নাহার বেবি জানান, তার স্বামী আদালতে আত্মসমর্পণ করতে চান। কিন্তু গুম আতঙ্কে পালিয়ে বেড়ানোর কারণে সেই সুযোগ পাচ্ছেন না। রোববার নির্বাচন কমিশনে দেয়া এক চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, সাদাপোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মিলনকে অনুসরণ করছেন। সরকারি দলের নেতা-কর্মীরাও পিছু নিয়েছে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যাওয়ার আগেই তাকে গুম বা হত্যা করা হতে পারে। এ ব্যাপারে ইসিকে দেয়া চিঠিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এহছানুল হক মিলন এবারও নিজ আসন চাঁদপুর-১ (কচুয়া) থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হচ্ছেন। ইতোমধ্যে তার পক্ষে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমাও দেয়া হয়েছে।

নাজমুন্নাহার বলেন, ‘মিলন দেশে ফিরে গুম ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে থাকায় এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। নানামুখী পুলিশি তৎপরতায় শঙ্কিত হয়ে তিনি চাঁদপুর আদালতে হাজিরা দিতে পারছেন না। ঢাকা ও চাঁদপুরের বাসাবাড়িতে তল্লাশি ও হয়রানি করছে পুলিশ, ডিবি পুলিশ।

তবে স্থানীয় পুলিশের দাবি, আদালত চত্বরে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ জন্য সেখানে ডিবি পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এতে কারো আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মিলনের বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। দেশে ফিরেও স্থানীয় আদালতে হাজির হচ্ছে না তিনি। আদালতে হাজির না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ তাকে খুঁজবে।

এদিকে মিলনের খোঁজে কোনো অভিযান চালানো হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন কচুয়া থানার ওসি আতাউর রহমান। আর চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, আদালত চত্বরে অন্য কোনো কারণে নয়, বাড়তি নিরাপত্তার জন্যই ডিবি পুলিশ প্রতিদিন নজরদারি করছে।

মিলন ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-১ আসনে বিজয়ী হন। তবে ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা মহীউদ্দীন খান আলমগীরের কাছে হেরে যান। আর বিএনপি ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় তিনিও ওই নির্বাচনে অংশ নেননি।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১০ বছরে মিলনসহ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিন নিয়ে তিনি বিদেশে চলে যান।