কেনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না, জানালো ইউরোপীয় ইউনিয়ন

বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর কারণ ব্যাখ্যা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আশাপ্রকাশ করেছে, এখানকার নির্বাচনটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ দূত রেন্সজে তেরিঙ্ক বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে ইইউ খুবই আগ্রহী এবং আমরা এটি খুব মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা খুশি যে এখানে দুই বিশেষজ্ঞসহ একটি ভালো দল এসেছে। তারা এখানকার পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন এবং সম্ভবত ব্রাসেলসে তাদের সদরদপ্তরে কিছু সুপারিশ করবেন।’

বুধবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে ইইউ’র দুই নির্বাচন বিশেষজ্ঞ- ডেভিড নয়েল ওয়ার্ড (দলনেতা) এবং ইরিনি-মারিয়া গোনারিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। যাতে তারা ইসির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এবং এখানে তাদের দায়িত্ব শুরু করতে পারেন।

এক প্রশ্নের জবাবে রেন্সজে তেরিঙ্ক বলেন, প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সময় সীমাবদ্ধতার কারণে ইইউ বাংলাদেশের নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাচ্ছে না। পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রস্তুতি শুরু করার জন্য ইইউ’র অন্তত অগ্রিম ছয় মাসের সময় প্রয়োজন।

‘নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর জন্য সকল অংশীদারদের কাছ থেকে অনেক চাপ এবং আগ্রহ থাকে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে থাকে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর ক্ষেত্রে আমরা সকলের অনুরোধ রাখতে পারি না,’ বলেন তিনি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ইইউ দূত বলেন, নির্বাচনের আয়োজন করা খুবই চ্যালেঞ্জিং কারণ ১০৪ মিলিয়ন ভোটার এবং ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি জানান, ‘আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশন ও তার সহকর্মীদের সঙ্গে খুব ভালো একটি বৈঠক করেছি। চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলটি ৪০ দিন এখানকার নির্বাচনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন।’

বিশেষজ্ঞ দলটি বাংলাদেশের জন্য সহায়ক হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে কি ঘটছে তা জানার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো যুক্তিসঙ্গত।’

এর আগে আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না বলে জানিয়েছিল ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য ডেভিড ম্যাকলিস্টার (এপিপি, ডিই) ও লিন্ডা ম্যাকভান (এস অ্যান্ড ডি) এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কোনো সদস্যকে এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখা বা মন্তব্য করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়নি।’

‘ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ডেমোক্রেসি সাপোর্ট অ্যান্ড ইলেকশন কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ’ বলছে, তারা এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াটির ওপর নজর রাখবে না, ফলে এ বিষয়টির ওপর কোনো মন্তব্যও করবে না এবং পরবর্তীতেও কিছু ঘোষণা করা হবে না।

চলতি বছরের ১৫ নভেম্বর নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট আশা প্রকাশ করে জানায়, এখানকার নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক হবে এবং এর মাধ্যমেই নাগরিকরা একজন সত্যিকারের নেতা খুঁজে পাবে।

পাশাপাশি নির্বাচনকালীন যে কোনো ধরনের সহিংসতা বা সহিংসতায় উসকানি যোগায় এমন কিছু থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।