অপ্রতিরোধ্য সিটিকে মাটিতে নামাল চেলসি

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চলমান মৌসুমের শুরু থেকেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। অবশেষে উড়তে থাকা সিটিজেনদের মাটিতে নামিয়ে এনেছে চেলসি। শনিবার ঘরের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে সিটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটি।

চেলসির দারুণ এই জয়ের নায়ক ডিফেন্ডাররা। এদিন সিটির একের পর এক আক্রমণ নিষ্ফল করে দিয়েছেন তারা। দল যে দুটি গোল করেছে দুটোই আবার এসেছে রক্ষণপ্রহরীদের সৌজন্যে। ৪৫ মিনিটে সিটির জাল কাঁপিয়ে চেলসিকে এগিয়ে দেন ফরাসি ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এন’গোলো কান্তে।

গোল শোধে মরিয়া পেপ গার্দিওলার দলকে আর ম্যাচে ফিরতে দেয়নি চেলসি। ৭৮ মিনিটে আরো একটি গোল করে সিটিকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় স্বাগতিকরা। ইডেন হ্যাজার্ডের কর্ণার কিক থেকে হেডে দুর্দান্ত গোল করে চেলসির জয় নিশ্চিত করেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ডেভিড লুইজ (২-০)।

আর তাতেই লিগের চলতি মৌসুমে প্রথম হারের স্বাদ পেল ম্যানচেস্টার সিটি। ফরওয়ার্ড সার্জিও অ্যাগুয়েরো এবং মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনের অনুপস্থিতির মাশুলটা এরচেয়ে বাজেভাবে দিতে পারত না সিটি। এই হারে লিগ টেবিলের দুই নাম্বারেই থাকতে হলো তাদের।

১৬ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট সিটির। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের মাঠে নামার আগে শীর্ষে উঠে যাওয়া লিভারপুলকেও তাই আর নামতে হচ্ছে না। সিটির সঙ্গে লিভারপুলের পয়েন্ট ব্যবধান অবশ্য বেশি নয়, মাত্র এক। তবু চেলসিকে একটা ধন্যবাদ দিতেই পারে অল রেডরা। সমান ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে চেলসি ও আর্সেনাল আছে টেবিলের তিন ও চার নাম্বারে (টটেনহাম-লেস্টার সিটি ম্যাচের আগ পর্যন্ত)।

শনিবার রাতে জয় পেয়েছে লন্ডনের আরেক ক্লাব আর্সেনালও। তবে ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে হাডার্সফিল্ড টাউনকে হারাতে যথেষ্ঠ ঘাম ঝড়াতে হয়েছে আর্সেনালকে (১-০)। পয়েন্ট খোয়ানোরই পালা হয়েছিল উত্তর লন্ডনের ক্লাবটির। ৮৩ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র ও জয়সূচক গোল করে সব শঙ্কা উড়িয়ে দেন লুকাস টোরেইরা।

তার গোলটাও দেখার মতো। বাইসাইকেল কিক থেকে টোরেইরা যে গোলটা করেছেন সেটা অনেকদিন লেগে থাকবে দর্শকদের চোখে। এনিয়ে টানা দুই ম্যাচে গোল করেছেন টরেইরা। আর্সেনালের মতো এই রাউন্ডে জয়ে ফিরেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও। তিন ম্যাচ ড্রয়ের পর জয়ের জন্য অত কাঠখড় পোড়াতে হয়নি রেড ডেভিলসদের।

ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফুলহামকে ডেকে এনে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ইউনাইটেড। দলের চারটি গোল করেছেন ভিন্ন চারজন। ১৩ মিনিটে অ্যাশলে ইয়াং করেছেন ম্যাচের প্রথম গোল। ৮২ মিনিটে শেষ গোলটি করেছেন মার্কাস রাশফোর্ড। মাঝের গোল দুটি করেছেন হুয়ান মাতা এবং রোমেলু লুকাকু।

দ্বিতীয়জনের গোলটা অবশ্য বেশি আলোচনায় এসেছে। বেলজিয়ান স্ট্রাইকার যে দীর্ঘ আট মাস পর গোলে ফিরেছেন! আর তিন মিনিট পার হলে গোল না পাওয়ার এক হাজার মিনিট পূর্ণ হয়ে যেত লুকাকুর! অবশেষে ম্যাচের ৪২ মিনিটে স্বস্তির গোলটি করেছেন তিনি।

বহুদিন পর গোল পেয়েছেন ইয়াংও। ফুলহামকে পেয়ে ৩৯ ম্যাচের গোলবন্ধ্যত্ব ঘুচিছেন ইংলিশ ফুটবলার। সহজ জয়ের ম্যাচে স্পেনের পঞ্চম ফুটবলার হিসেবে ইংলিশ লিগে আবার ৫০তম গোলের দেখা পেয়েছেন মাতা। রাশফোর্ড অবশ্য নিয়মিতই গোল পাচ্ছেন।

৬৭ মিনিটে কামারা পেনাল্টি থেকে গোল করে ফুলহামের হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাতে কাজ হয়নি। ম্যাচের শেষ দিকে ফুলহামকে চতুর্থ গোল হজম করতে হয়। ৬৮ মিনিটে দশ জনের দলে নেমে আসা ফুলহামকে নিয়ে পুরো ম্যাচে ভালোই ছেলেখেলা করল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

রাজসিক এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুই ধাপ ওপরেও উঠে এসেছে হোসে মরিনহোর দল। ১৬ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট ম্যানইউর।

এক নজরে ফলাফল:

বোর্নমুথ ০-৪ লিভারপুল

আর্সেনাল ১-০ হাডার্সফিল্ড টাউন

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৪-১ ফুলহাম

চেলসি ২-০ ম্যানচেস্টার সিটি