ইতিহাস গড়তে বাংলাদেশের দরকার ১৯১

সিলেট স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ইনিংস শুরুর ছয় ওভারে ৯০ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ (শুক্রবার) সেই ঝড় আবার দেখল বাংলাদেশ। এবার প্রথম ছয় ওভারে ক্যারিবীয়রা করেছে ৮৮ রান। টপ অর্ডারের এনে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টাইগারদের ১৯০ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

আসলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়রা যেভাবে শুরুতেই ঝড় উঠিয়েছিল মিরপুরে তাতে যে কারোরই মনে হচ্ছিল আজ দুশো ছাড়াবে তারা। সেই ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করলেন সাকিবরা। এদিনও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন তিনি। তুলে নিয়েছেন তিন উইকেট। মুস্তাফিজুর রহমান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের শিকারের সংখ্যাও তিনটি।

ম্যাচে শিশির একটা ফ্যাক্টর হবে। সেটা ভেবেই টস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। মুদ্রা নিক্ষেপের লড়াইয়ে জিতে সতীর্থ আবু হায়দার রনির হাতে বল তুলে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। টাইগার দলপতির সিদ্ধান্তটা যৌক্তিক ছিলা কিনা সেই প্রশ্নটাই উঠে গিয়েছিল শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঝড় তোলায়।

রনির প্রথম ওভারে ১২ রান তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশি পেসার দুঃস্বপ্ন দেখলেন নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় ওভারে। রনিকে বেধড়ক পিটিয়ে লুইস-হোপ তুলে নেন ২৭ রান। ওভারে ছক্কা চারটি। আগের দুই ম্যাচে রান না পাওয়া এভিন লুইস জেগে উঠলেন তৃতীয় ম্যাচে।

ব্যাটকে রীতিমতো তরবারী বানিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের কচুকাটা করতে থাকেন লুইস। লুইস তাণ্ডবে পাঁচ ওভার পূর্ণ হওয়ার আগেই বিনা উইকেটে ৭৬ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অবশেষে স্বস্তির ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। ফেরার আগে ১২ বলে ২৩ রানের ঝড় দেখিয়েছেন হোপ।

৭৬ রানে উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকেই ধুঁকতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাকিবদের দুর্দান্ত বোলিং তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়াতে থাকে ক্যারিবীয়রা। ১২২ রানে দলের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফিরে গেলেন লুইস। তখনো ইনিংসের অর্ধেক ওভার পূরণ করেনি বাংলাদেশ।

হোপের ইনিংসটা যদি ঝড় হয় তাহলে লুইসের ইনিংসটা হবে টর্নেডো। এদিন ৩৬ বলে ৮৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন ক্যারিবীয় ওপেনার। ইনিংসে ছয়টি চার হাঁকিয়েছেন তিনি। ছক্কার সংখ্যা ৮টি। তন্মধ্যে একটা বল তো স্টেডিয়ামের বাইরেও ফেলেছেন তিনি!

লুইস আউট হতেই যেন লড়াইয়ে প্রাণ ফিরে পেল বাংলাদেশ। সাকিবদের সামনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেননি আর কেউ। ১৬ বলে ১৯ রানে ফিরেছেন রভম্যান পাওয়েল। নিকোলাস পুরান ২৯ রান করলেও বল খরচ করেছেন ২৪টি! ইনিংসে দুটি করে চার-ছক্কা মেরেছেন তিনি।

ক্যারিবীয়দের ‘অল্প’তে থামিয়ে বোলাররা তাদের কাজটা করেছেন। এবার বাকি কাজ ব্যাটসম্যানদের। ১৯১ রান করতে পারলেই তিন ফরমেটে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়া হবে বাংলাদেশের। তামিম-সাকিবরা ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারবেন তো? উত্তরটা দূরে নয়।