আজ খালেদা জিয়ার কারাবাসের এক বছর

বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বন্দীদশার ১ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ ৮ ফেব্রুয়ারি। গেল বছরের এই দিনে তাকে ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড নিয়ে পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। পরে তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। এর মধ্যেই ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ মামলায় সাত বছরের দণ্ড নিয়ে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে। তার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে চারটির জামিন এখনো বাকি। ফলে সহসাই বিএনপি নেত্রীর মুক্তির সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে বলছেন আইনজীবীরা।

গত একটি বছর দলীয় চেয়ারপার্সনের মুক্তির জন্য আইনি লড়াই চালিয়েছে বিএনপি। কিন্তু দলটি এ ক্ষেত্রে সরকারি কৌশলের সঙ্গে খুব একটা পেরে ওঠেনি। আর রাজপথের আন্দোলনও জোরদার করতে পারেনি। এর মধ্যেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে।

এদিকে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আইনজীবী ও স্বজনরা জানিয়েছেন, নির্জন কারাগারে বয়স্ক খালেদা জিয়া হৃদযন্ত্র, চোখ ও হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন। কারাগারে প্রায় প্রতিদিন তিনি সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা পড়েন, নিয়মিত ইবাদত-বন্দেগী করেন এবং বই পড়েন। এভাবেই তার দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দেয়া নিম্ন আদালতের ৫ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। সম্প্রতি এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করা হয়। আর ২৯ অক্টোবর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এ মামলায় খালাস চেয়ে আসামী পক্ষের করা আপিল হাইকোর্টের কোনো বেঞ্চে এখনো উপস্থাপন করা হয়নি।

মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি দুর্নীতির মামলা, যেগুলো হলো- জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, নাইকো, গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি মামলা। এ পাঁচ মামলা বিগত সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে (এক-এগারোর সময়) করা হয়েছিল। বাকি ৩১টি মামলা ২০১৪ সালের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা। এ মামলাগুলো মূলত রাষ্ট্রদ্রোহ, হত্যা, ইতিহাস বিকৃতি, বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি, ভুয়া জন্মদিন পালন ও ঋণখেলাপির অভিযোগে মামলা।