বাদ জোহর কবি আল মাহমুদের জানাজা

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদের নামাজে জানাজা বাদ জোহর জাতীয় মস‌জি‌দ বায়তুল মোকাররমে অনু‌ষ্ঠিত হবে। কবির সহকারী আবিদ আজম তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তবে কবিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে কিনা, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।

কবি আল মাহমুদ শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই জন্ম নেয়া কবির মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়াংশে সক্রিয় থেকে তিনি আধুনিক বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে, চেতনায় ও বাকভঙ্গিতে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

কবির সহকারী আবিদ আজম কবির পারিবারারের পক্ষ থেকে ‘আল মাহমুদের জানাজা ও দাফন প্রসঙ্গে ক‌বি প‌রিবারের প্রত্যাশা’ শিরোনামে এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, ‌‘শোকসন্তপ্ত ক‌বি প‌রিবার আশা পোষণ করে-

ক) সকাল ১১টায় কবির মরদেহ শহীদ মিনারে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও দোয়ার জন্য রাখা হবে।

খ) পরে বাংলা একাডেমি বা জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনেও কবিকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য নেয়া হবে।

গ) আল মাহমুদের নামাজে জানাজা জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে, বাদ জোহর করা হবে। বিকল্প হিসেবে জাতীয় মস‌জিদ বায়তুল মোকাররম।

ঘ) নামাজে জানাজা শেষে দাফনের জন্য পছন্দ স্থানসমূহ-

১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে।

২)‌ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে (এ দ‌ু‌টি‌র কোনোর অনুম‌তি না মিললে)।

৩) কবির গ্রামের বাড়িতে (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের মোল্লাবাড়ির পা‌রিবা‌রিক কবরস্থানে)।

কবি আবিদ আজম আরো উল্লেখ করেন, ক‌বির প‌রিবার আন্ত‌রিকভাবে প্রত্যাশা করে, সং‌শ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আল মাহমুদের প‌রিবার ও কবির ভক্তদের পছন্দকে গুরত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন। আধু‌নিক বাংলা ভাষা ও সা‌হিত্যে অ‌বিস্মরণীয় অবদান ছাড়াও ভাষা সংগ্রামী এবং একজন স‌ক্রিয় মুক্তিযাদ্ধা হিসেবে আল মাহমুদকে ‌শেষ শ্রদ্ধাটুকু জানাবেন।

পরবর্তী এক পোস্টে আবিদ আজম জানান, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য কবির কফিন। শহীদ মিনারে নেয়ার ব্যাপারে ক‌বির প‌রিবারকে এখনো নি‌শ্চিত করা হয়নি।

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তিনি সরকার বিরোধী হিসেবে পরিচিত দৈনিক গণকণ্ঠ (১৯৭২-১৯৭৪) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে যে কয়েকজন লেখক বাংলা ভাষা আন্দোলন, জাতীয়তাবাদ, রাজনীতি, অর্থনৈতিক নিপীড়ন এবং পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার বিরোধী আন্দোলন নিয়ে লিখেছেন তাদের মধ্যে কবি আল মাহমুদ একজন।

তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ছিলেন। লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৬৬) ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।