চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা আসলে কত?

রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি যেন কাটছেই না! দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে আসা নিহতের সংখ্যায় অস্বাভাবিক পার্থক্য দেখা গেছে। গতকাল দিনভর নিহতের সংখ্যা নিয়ে সবার মনেই ধোঁয়াশা ছিলো। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আসলে কত?

অগ্নিকাণ্ডের পর উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৭০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের এই সংখ্যাটিই নিশ্চিত করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার আলী আহম্মেদ। পরে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়েও ৭০টি লাশ উদ্ধারের কথা জানান তারা।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ব্রিফিং করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাক্তার সোহেল মাহমুদ। তিনি জানান, নিহতের সংখ্যা ৭৮। তার বরাত দিয়েই এই সংখ্যা প্রচার করে বিবিসি, আল জাজিরাসহ দেশি-বিদেশি বেশিরভাগ গণমাধ্যম। গণমাধ্যমে পাঠানো শিল্প মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনেও নিহতের সংখ্যা ৭৮ জন উল্লেখ করা হয়।

কিন্তু নিহতের সংখ্যা ৬৭ জন বলে জানান ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সেলিম রেজা। হাসপাতাল মর্গে লাশ হস্তান্তর পরিদর্শনে গিয়ে এই সংখ্যা উল্লেখ করেন পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীও।

এরপর রাত ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কর্তব্যরত কর্মকর্তা রাসেল সিকদার জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৬৭টি লাশ উদ্ধার করেছে। রাতে ঢামেকের ডা. সোহেল মাহমুদও আগের সংখ্যা থেকে সরে এসে নিহতের সংখ্যা ৬৭ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ৬৭টি লাশ বুঝে পেয়েছি। এর মধ্যে ৪০টি লাশ শনাক্ত হওয়ার পর স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আর ২৭টি লাশের পরিচয় শনাক্ত হয়নি।’

বাংলাদেশের প্রভাবশালী সংবাদ সংস্থা ইউএনবি-এর সন্ধ্যায় হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয় চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্য বেড়ে ৮১ জনে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য পরে সরকারি সংস্থার আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়া তথ্যের বরাত দিয়ে নিহতের সংখ্য ৬৭ বলে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা আসলে ১১০ জন। ঢাকার প্রবীর বড়ুয়া চৌধুরী ও জুলফিকার আলি মানিকের সহায়তায় ভারতের নয়াদিল্লি অফিস থেকে প্রতিবেদনটি করেন জেফ্রি গেটলম্যান।