উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে রাখার দাবিকে সামনে রেখে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদল। রোববার দুপুরে সাত দফা দাবি নিয়ে এ বিক্ষোভ করেছে তারা।

ছাত্রদলের অন্তত তিন শতাধিক নেতাকর্মী বেলা ১২টার দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নামে স্লোগান তুলে মধুর ক্যান্টিন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থা নেন।

এসময় নেতাকর্মীরা ‘হলে হলে ভোটকেন্দ্র মানি না, মানবো না', প্রহসনের নির্বাচন মানি না, মানি না’, আমাদের সাত দফা, মানতে হবে, মানতে হবে ' ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছিলেন ৷

উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের তারিখ পুনরায় পেছানোর দাবি এবং ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে রাখার দাবিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে সাত দফা দাবি জানিয়েছি কিন্তু প্রশাসন আমাদের কোনো আশ্বাস দেইনি। আমরা এখনও প্রশাসনকে দাবিগুলো মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

ছাত্রদলের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-

এক. ন্যূনতম তিন মাস সকল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান ও স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড করার অধিকার নিশ্চিত হওয়ার পরই ডাকসুর তফসিল ঘোষণা করা।

দুই, অংশগ্রহণমূলক ও ভীতিহীন পরিবেশে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে হলগুলো থেকে ভোট কেন্দ্র একাডেমিক ভবনগুলোতে স্থানান্তর করতে হবে। এতে করে হলের আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে ভোট প্রদানের সুযোগ পাবে।

তিন. বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদেরকে ভোটার ও প্রার্থী হওয়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ত্রিশ বছরের যে বয়সসীমা বেধে দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করতে হবে কারণ ছাত্রত্ব নির্ধারণ করা উচিত ভর্তির শিক্ষাবর্ষ দিয়ে, বয়স দিয়ে নয়।

চার. ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃবৃন্দের নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না। ছাত্র সংগঠনগুলোর কোনো প্রার্থী ও নেতাকর্র্মীদের কোনো প্রকার হয়রানি, মামলা অথবা গ্রেপ্তার না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

পাঁচ. শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ডাকসু নির্বাচনের লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর যে সকল হামলা ও নির্যাতন হয়েছে তার নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

ছয়. ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত কমিটি গঠিত হয়েছে বিশেষ করে নির্বাচন পরিচালনা ও উপদেষ্টা কমিটি এগুলোর পুনর্গঠন করতে হবে। নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য শিক্ষকদের এসব কমিটি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সাত. ডাকসু গঠনতন্ত্রে সন্নিবেশিত ৫ (এ) অগণতান্ত্রিক ধারাটি সংশোধন করে ছাত্র সংসদ বিলুপ্তি অথবা কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সভাপতি ও ছাত্র সংসদের যৌথ সিদ্ধান্তের বিষয় সংযোজন করতে হবে এবং ৮ (এম) ধারাটি সংশোধন করতে হবে।

প্রসঙ্গত, আগামীকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন সংগ্রহের শেষ দিন। আজই সংগঠনগুলোর চূড়ান্ত প্যানেল ঘোষিত হওয়ার কথা রয়েছে।