মধ্যরাতে এরশাদের ঘোষণা, জাতীয় পার্টিতে কোন্দল!

দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকে অখুশি হলেও শেষ পর্যন্ত নিজের উত্তরসূরি হিসেবে ভাই জি এম কাদেরের ওপরই আস্থা রেখেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।

গত শনিবার মাঝরাতে হঠাৎ সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে নিজের অসুস্থতাকালীন সময়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং জাপার ভবিষ্যত চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরে নাম ঘোষণা করেন এরশাদ। তবে প্রকাশ্যে কেউ মন্তব্য না করলেও সিদ্ধান্ত জানাতে মধ্যরাতের সংবাদ সম্মেলনকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

জাপার নেতারা বলছেন, এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ ও তাঁর অনুসারী নেতাদের উদ্দেশেই তিনি এই ঘোষণার মাধ্যমে বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, জি এম কাদেরই হবে জাতীয় পার্টির ভবিষ্যত নেতা।

জাপার দায়িত্বশীল একজন নেতা বলেন, 'এমন নাটক এরশাদ আগেও করেছেন। এবারের ঘটনাটিও নাটক কিনা তা জানতে একটু অপেক্ষা করতে হবে।'

জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেন, এরশাদের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। দলের দাপ্তরিক চিঠিপত্রেও তিনি ঠিকমত সই করতে পারছেন না। তাই তিনি ভাইকে দলের নেতৃত্বে স্থিতিশীল দেখে যেতে চান। জিএম কাদেরের নেতৃত্ব নিয়ে দলে যাতে কোনো দ্বিধা বা কোনো চ্যালেঞ্জ না আসে সেটি পরিষ্কার করতেই তিনি এই ঘোষণা দেন।

তবে অনেকের দাবি, এরশাদকে বুঝিয়ে এই বিবৃতি নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে দলে রওশনপন্থীদের কোণঠাসা করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাংসদ ফকরুল ইমাম বলেন, 'বিষয়টি অমানবিক! সব কাজেরই একটি সময় এবং সৌন্দর্য আছে। পরদিন সকালেও এসব কথা বলা যেত।'

এরশাদের অবর্তমানে বিরোধীদলীয় নেতা কে হবেন, তা নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টির সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এরশাদ সম্প্রতি রওশন এরশাদকে উপনেতা করেছেন জি এম কাদেরকে সরিয়ে।

এদিকে, দলীয় সাংসদদের বেশির ভাগের সমর্থন পেলেই এরশাদের অবর্তমানে জি এম কাদের বিরোধীদলীয় নেতা হবেন। তাই শেষ পর্যন্ত কি হবে তা নিয়ে দলের ভেতর এখন থেকেই জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। জাতির পার্টির সূত্রে জানা যায়, জি এম কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা করার পর অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাই তাকে এড়িয়ে চলছেন।