প্রচণ্ড তাপদাহে কাবু চিড়িয়াখানার পশু-পাখিও, দেয়া হচ্ছে স্যালাইন

শেষ বৈশাখের খরতাপে জনজীবন হাঁসফাঁস করছে। ভ্যাপসা এই গরমে কেবল মানুষের প্রাণই ওষ্ঠাগত নয়, পশু-পাখিরাও অতিষ্ঠ। চলমান তাপদাহে কাবু হয়ে চিড়িয়াখানার পশু-পাখিরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে, মারা পড়ছে পাখি। ফলে পশু-পাখিদের সুস্থ রাখতে নিয়মিত স্যালাইন দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ঢাকা চিড়িয়াখানর প্রধান কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম জানান, ৭৫ শতাংশ এলাকাই বনভূমি হওয়ায় বাইরের থেকে ২-৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা কম থাকে ঢাকা চিড়িয়াখানায়। কিন্তু এবার উষ্ণতা বেশি বেড়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে প্রাণীদের প্রাণবন্ত রাখতে কিছু অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

পশু-পাখিদের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে যে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে গরমে কাবু হওয়া প্রাণীদের খাঁচায় ক্যানেলের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা, আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বিশুদ্ধ পানি তোলার ব্যবস্থা রাখা, পাইপ দিয়ে গাছে ছিটানো, প্রাণীদের নিয়মিত খাবার স্যালাইন ও ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত খাবার দেয়া, প্রাণীদের শরীরে পানি ছিটানো, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার পানি দেয়া ইত্যাদি।

এ ব্যাপারে চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. হাসান ইমাম বলেন, ‘অনেক পাখির প্রজনন হয়ে থাকে বসন্তকালে। এর পরবর্তী কিছু দিন এ সব পাখির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। কিন্তু বয়ে যাওয়া প্রচণ্ড গরমে এ সব পাখির সমস্যা হচ্ছে।’

তিনি জানান, চলমান তাপদাহে প্যাঁচার মতো কিছু প্রজাতির পাখির প্রজননে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেই সঙ্গে এ সব পাখির স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে। কেননা, প্রচণ্ড গরমের কারণে গাছের কোঠরে ডিম পাড়া ও বাচ্চা জন্ম দেয়া পাখিদের প্রজনন বিঘ্নিত হয়। এছাড়া সারাদিন গাছের ডালে ঝুলে থাকা বাঁদুরেরও মৃত্যু হতে পারে।

চিড়িয়াখানার কর্মচারীরা বলছেন, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার বেশি গরম অনুভুত হচ্ছে। এতে পাখিদের পাশাপাশি প্রাণীদেরও ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। গয়াল, জিরাফ ও বিড়াল প্রজাতির প্রাণীদের আচরণে বিষয়টি বেশ স্পষ্ট। এছাড়া কাঠবিড়ালি ও গিরগিটিও গরমের কারণে কাবু হয়ে পড়ায় চঞ্চলতা কমে গেছে।