গাড়ি থামিয়ে ধান ক্ষেতে ডিসি

ধানের ন্যায্য মূল্য না থাকায় কৃষকরা সংকটময় জীবন পার করছেন। তাই সারাদেশের মতো চলতি বোরো মৌসুমে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে। আর এই শ্রমিক সংকটের কারণে বেশি মজুরি দিয়ে শ্রমিকদের কাজ করাতে হচ্ছে কৃষকদের। একদিকে ধানের কম দাম, অন্যদিকে শ্রমিক সংকট; দুয়ে মিলে এক চরম বিপর্যয়ে পড়েছেন এই জেলার কৃষকরা। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে কৃষকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস।

মঙ্গলবার সকালে চলতি বোরো মৌসুমের ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধনের জন্য জীবননগরে যাচ্ছিলেন জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস। যাওয়ার পথে সড়কের পাশে একটি ক্ষেতে এক নারীকে ধান কাটতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে তিনি নিজে ওই ক্ষেতে ধান কাটতে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খাঁন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার ফরহাদ আহমদ।

খবর পেয়ে স্থানীয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈশা, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারমিন আক্তার, ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ঘটনাস্থলে এসে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ধান কাটায় যুক্ত হয়। পরে বিনা পারিশ্রমিকে স্বেচ্ছায় ধান কেটে দেন তারা।

ধানক্ষেতের মালিক জেবুনেছা জানান, তার ১৫ কাঠা জমির ধান পেকে যাওয়ার পরও টাকার অভাবে ধান কাটাতে পারছিলেন না। তাই উপায় না পেয়ে ছেলেকে সাথে নিয়ে ধান কাটতে নিজেই মাঠে নেমে যান। পরে ডিসি (জেলা প্রশাসক) সাহেবের সাথে অনেকে এসে আমার ক্ষেতের ধান কেটে দিয়ে যান।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস বলেন, আমরাও কৃষকের সন্তান। কৃষকদের এই দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমদের নৈতিক দায়িত্ব। এই সংকটময় মূহুর্তে তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেদেরও সৌভাগ্যবান মনে করছি।

তিনি বলেন, কৃষকরা সাময়িক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। হয়তো খুব শীঘ্রই সমস্যা কেটে যাবে। এছাড়াও কৃষকরা উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে আশা করেন তিনি।