আইলাবিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার, অনিয়মের অভিযোগ
- Details
- by শেখ দিদারুল আলম, ইউএনবি
ঘূর্ণিঝড় আইলায় খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫৯৭ কিলোমিটার বাঁধ পানির তোড়ে ভেসে যায়। উপকূলের মানুষের দাবি ছিল, টেকসই বেড়িবাঁধ। ২০০৯ সালে আইলার পর ১০ বছরেও তা নির্মিত হয়নি। উপরন্তু, জোড়াতালি দিয়ে বাঁধ সংস্কারে অর্থের অপচয় ও প্রকল্পে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মী ও ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, আইলার পর ‘উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প ফেজ-১’ এর আওতায় খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, পটুয়াখালি, বরগুনায় ৬২৫ কিলোমিটার বাঁধ পুননির্মাণে বৃহৎ প্রকল্প নেয়া হয়। এছাড়া ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন প্রকল্প (২য় পর্যায়), ২৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাগেরহাট জেলার ৩৬/১ পোল্ডারে পুনর্বাসন প্রকল্প, ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনার দাকোপে ৩১নং পোল্ডার এবং বটিয়াঘাটায় ৩০ ও ৩৪/২ পোল্ডারে বাঁধ পুনঃসংস্কারের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা অঞ্চলে বাস্তবায়ন করা হয়েছে অবকাঠামো পুনর্বাসন (দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল) প্রকল্প, নদী তীর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প (৪র্থ পর্যায়), এফডিআর- ২০০৭ (ওয়ামিপ) প্রকল্প।
কিন্তু এতসব প্রকল্পের পরও গত ৪ মে ঘূর্ণিঝড় ফণি’তে উপকূলের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক ছিল ‘বেড়িবাঁধের ভাঙন।’ এই ঘূর্ণিঝড়ে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ধসে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। অভিযোগ রয়েছে, নানা অনিয়মের কারণে বাঁধ সংস্কারে কিছুদিনের মধ্যে তা আগের চেহারায় ফিরে যায়।
কয়রার ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুল গফ্ফার ঢালি বলেন, বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনীহা রয়েছে। নামমাত্র বাঁধ সংস্কার হয়, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে তারা কাজটা করে না। যে পয়েন্টে বাঁধ ভাঙে জোড়াতালি দিয়ে সেখানে তা সংস্কার হয়। তখন আবার অন্য অংশ ভাঙন দেখা দেয়। বছরের পর বছর তাদের এই ব্যবসা বন্ধ হয় না।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ খাউলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, চায়না প্রজেক্টের তত্ত্বাবধানে বাঁধ নির্মাণ কাজে ধীরগতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এখানে নদী তীরে চরের মাটি কেটে বাঁধ উঁচু করা হয়েছে। এতে বাঁধের ঢাল না থাকায় বাঁধ আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। নকশা না মেনেই অনেক স্থানে বাঁধের ঢালটা ১ থেকে দেড় ফুট কমিয়ে ফেলা হয়েছে। মাটি বিক্রি নিয়ে আর্থিক অনিয়মে জড়িয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও ঠিকাদারের লোকজন।
খুলনার কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম মহসিন রেজা বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজের মূল যে ঠিকাদার তাকে আমরা কখনও এলাকায় দেখিনি। তিনি কাজ পাওয়ার পর নির্দিষ্ট কমিশনে কাজটি অন্য ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেন। ওই ঠিকাদার আবার তার কমিশন রেখে কাজটি ছোট ছোট অংশে ভাগ করে অন্য ঠিকাদারদের হাতে দেন। এই হাত বদলের পর মাঠ পর্যায়ে ৪০-৪৫ ভাগ বরাদ্দ পাওয়া যায়। এর সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনও জড়িত অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে বাঁধ রক্ষায় পরিকল্পিতভাবে প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, উপকূলের ভরাট হতে থাকা নদী ড্রেজিং করে নদীর তীরে ১০-১৫ ফুট চর তৈরি করা গেলে এবং বাঁধের ভেতরে ও বাইরে পরিকল্পিত বনায়ন করা হলে এই বাঁধ ৫০ বছরেও নড়বে না।
পাউবো, সাতক্ষীরা, ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, ঝুঁকি মোকাবেলায় ১৮-২০ ফুট উঁচু টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাঁধ সংস্কারে ছোটখাট কাজ হলেও এতদিন বড় ধরনের সংস্কার করা হয়নি। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উপকূলে স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ সম্ভব হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, আইলার পর ১০ বছর অতিবাহিত হলেও উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি, কয়রা সদর, মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের উপর মানুষ আজও ঝুঁপড়ি বেঁধে বসবাস করছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে শত কষ্টের মধ্য দিয়ে বেড়িবাঁধকে আঁকড়ে ধরে আছেন তারা।
ঝুঁপড়ির বাসিন্দারা জানান, সহায়-সম্পদ বলতে যা কিছু ছিল তার সবটুকু জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তাছাড়া ওই সময়কার নদীর প্রবল ভাঙনে শাকবাড়িয়া, কপোতাক্ষ ও কয়রা নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের বসতভিটা, আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গাছপালা শূন্য কয়রা উপজেলার পরিবেশ এখনও সম্পূর্ণ ফিরে পায়নি তার পূর্বের রূপ। যে কারণে শুষ্ক মৌসুমে প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষের জীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। লবণাক্ততার কারণে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে কৃষকরা আজো ঠিকমতো ফসল ফলাতে পারছে না।
তবে স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কয়রার কৃষকরা তাদের জমিতে ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হলেও অনেক এলাকা লবণাক্ততার গ্রাস থেকে এখনও রেহাই পায়নি। আইলার ভয়াবহতায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন। এলাকায় পা দিলেই ১০ বছর আগে ঘটে যাওয়া আইলার চিহ্ন এখনও স্পষ্ট দেখা যায়, যা দেখে না দেখা মানুষও অনুমান করতে পারবে ২৫ মে, ২০০৯ সালে সেখানে কি ঘটেছিল। আইলার পর ১০ বছর অতিবাহিত হলেও সমগ্র কয়রা উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধগুলোর এখনো কোনো সংস্কার হয়নি। কয়েক লাখ মানুষকে সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে।
এ মুহূর্তে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দু’টি পোল্ডারে ২৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে উপজেলার ১৪/১ ও ১৩-১৪/২ পোল্ডারের আওতায় বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো হলো- দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের জোড়শিং, খাসিটানা, ছোট আংটিহারা, গোলখালি, মাটিয়াভাঙ্গা, চরামুখা, দক্ষিণ বেদকাশী ও মেদের চর, উত্তর বেদকাশির গাতিরঘেরি, শাকবাড়িয়া, গাব্বুনিয়া, পুটিঘেরী, গাজীপাড়া, কাশিরহাট, কাটমারচর, কাটকাটা ও পাথরখালি এলাকা।
এছাড়া কয়রা সদর ইউনিয়নের গোবরা, হরিণখোলা, গুড়িয়াবাড়ি স্লুইচ গেট, ৪নং কয়রা লঞ্চঘাট ও মদিনাবাদ তহশীল অফিসসহ মহারাজপুর ইউনিয়নের লোকা, পূর্ব মঠবাড়ি, দশাহালিয়া, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের বানিয়াখালি, হড্ডা খেয়াঘাট এলাকা, তেঁতুলতলারচর ট্রলারঘাট এলাকা রয়েছে। এর মধ্যে ১৩-১৪/২ নম্বর পোল্ডারে লোকা ও পূর্ব মঠবাড়ি এলাকায় সাড়ে তিন কিলেমিটার এবং ১৪/১ নম্বর পোল্ডারে ৪ নম্বর কয়রা লঞ্চঘাট, গোবরা, ঘাটাখালি, হরিনখোলা, গুড়িয়াবাড়ি স্লুইস গেটের পূর্ব পাশে, জোড়শিং, চরামুখা, ছোট আংটিহারা ও মাটিয়াভাঙা এলাকার সাত কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে আইলা বিধ্বস্ত দু’টি ইউনিয়ন সুতারখালী ও কামারখোলার কয়েকশ’ মানুষ এখন ঘরে ফিরতে পারেনি। সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগী, বাইনপাড়া ও গুনারী এবং কামারখোলার জালিয়াখালী, ভিটেভাঙ্গা এলাকার শত শত পরিবার আজো ওয়াপদা বেড়িবাঁধের উপর মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এদের অধিকাংশের মাথা গোজার শেষ আশ্রয়টুকু নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে কালাবগী শিপসা পাড়ের ভাঙনে আইলার মত ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কায় এলাকাবাসী। আইলায় দু’টি ইউনিয়নের অভ্যন্তরীন সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিধস্ত হয়। যা গত ১০ বছরে এখন পর্যন্ত পুননির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কালাবগী ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের কয়েক শ মানুষ বেড়িবাঁধের উপর টোং ঘর করে অনেকটা নদীর চরে ঝুলে বসবাস করায় ওই অঞ্চলটির নামকরন হয়েছে কালাবগী ঝুলন পাড়া। যাদের একটি অংশ বাস করে কালাবগী ৯নং ওয়ার্ডের বিচ্ছিন্ন দ্বীপের উপর। চারিপাশে কোনো বেড়িবাঁধ নেই। কোনো রকমে টোং ঘর করে আছে তারা। নদীতে জোয়ার আসলে সাতরিয়ে এসে ওয়ার্ডের মূল ভুখণ্ডের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নৌকায় চড়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। স্বাভাবিক অপেক্ষা নদীতে পানির চাপ একটু বেড়ে গেলেই তাদের জীবন শতভাগ হুমকির মুখে। এ যেন জীবন নিয়ে খেলা করা।
কালাবগী ৯নং ওয়ার্ডের বিচ্ছিন্ন দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দা হারুন সানা রেজাউল সানাসহ অনেকেই নানা প্রশ্নের উত্তরে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এখানে বেঁচে থাকায় আমাদের এখন দায়।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে দাকোপের দু’টি পোল্ডারে ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলমান আছে। আইলার অভিজ্ঞতা নিয়ে ভূমি থেকে ১০ ফুট উচ্চতা এবং বাঁধের টপ লেভেলে ১৪ ফুট প্রসস্থ করে প্রকল্পের ডিজাইন করা হয়।
জানা গেছে, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬ শুরু হয়ে ৩ বছর মেয়াদী প্রকল্পের কাজ ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু দাকোপের পৃথক দু’টি পোল্ডারে ৬০-৭০ ভাগ কাজ এ পর্যন্ত শেষ হয়েছে।
প্রকল্প পরামর্শক সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় জুন ২০২০ পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। চায়নার দি ফাস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। কিন্তু সেই বাঁধ নির্মাণ কাজে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ফলে কাজ শেষ হওয়ার আগেই তার স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, রাস্তা নির্মাণ কাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাটির পরিবর্তে বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। অপেক্ষাকৃত কম মূল্য এবং সহজলভ্য হওয়ায় তারা বালি দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করছে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন রাস্তার স্লোভ এবং টপ লেভেল মাটির প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু রাস্তার ভেতরে পুরোটাই থাকছে বালি দিয়ে ভরা।
দাকোপের ভুক্তভোগী জনসাধাণন বিশ্বব্যাংকের চলমান কাজ নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও চায়না কোম্পানির তৈরি করা বালির বাঁধ আমাদের জীবনকে আরো বেশি ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এ বিষয়ে তারা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ ও তদারকি কামনা করেছেন।
অপরদিকে শ্যামনগর ও আশাশুনির বেড়িবাঁধ এখনও বিধ্বস্ত অবস্থা রয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুড়া, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ আজও তাদের ভিটায় পা রাখতে পারেনি। সাতক্ষীরা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াবাড়িতে জীবন যাপন করছেন তারা। এখনো আকাশে মেঘ ডাকলেই কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া ও শাকবাড়ীয়া নদীর তীরবর্তী মানুষরা আঁতকে ওঠেন। পানি একটু বাড়লেই ঘুম বন্ধ হয়ে যায় তাদের।
শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা গ্রামের মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ২০ বছরের আয় রোজগারের অর্থ দিয়ে বাড়ি বানিয়ে ছিলাম। আইলার তাণ্ডবে দুই দিনপর শুধু বাড়ির নিশানাটুকু পাওয়া গেছে। ঘরের ভিটের চিহ্ন ছাড়া সম্বল বলতে কিছু ছিল না। আইলার ১০ বছর পর এখনো সেই মাটি আঁকড়ে পড়ে আছি। এরপর আর ঘর তোলা সম্ভব হয়নি।
দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা বলেন, নলকূপের পানি খাওয়া যায় না। অনেক লবণাক্ত। একটু ভালো পানি খাওয়ার জন্য রীতিমত আমাদের যুদ্ধ করতে হয়। ১০-১২ কিলোমিটার হেঁটে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয় প্রতিদিন। তাছাড়া বাধ্য হয়েই পুকুরের পানি পান করতে হচ্ছে।
শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম জানান, দুর্গত এলাকায় এখনও খাবার পানির তীব্র সংকট। আইলায় মিষ্টি পানির আধারগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। যেটুকু খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এলাকায় কাজ নেই রয়েছে বনদস্যুদের অত্যাচার। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি উপকূলীয় এসব জনপদের মানুষ। বহু মানুষ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, সরকারিভাবে মানুষদের নিরাপদে থাকার জন্য ৪০টি সাইক্লোন শেল্টার নুতন করে তৈরির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো সংস্কারের জন্যও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নিরাপদ পানির জন্য পুকুর কাটা হচ্ছে। তবুও এসব এলাকার মানুষদের সমস্যার অন্ত নেই। তবে সরকার তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.