জরিপ: প্রতি মাসে সড়কে ঝরছে ৩৭৮ জনের প্রাণ

চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ৩৭৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে এক জরিপে দাবি করা হয়েছে।

বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর) নামক সংগঠনটি রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করেছে।

সংগঠনটি তাদের নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলেছে, গত পাঁচ মাসে এক হাজার ৭৯২টি সড়ক দুর্ঘটনায় এক হাজার ৮৯০ জন নিহত ও তিন হাজার ৫৪৩ জন আহত হয়েছেন। নিহতের তালিকায় ২৪২ জন নারী ও ৩১২ শিশু রয়েছে।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ সারাদেশে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংগঠনটি বলছে, দেশের ২২টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৩৮৩টি দুর্ঘটনায় ৫৩ নারী, ৭১ শিশুসহ ৪১১ জনের প্রাণহানি ও ৭২৫ জন আহত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে ৪০১টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হয়েছেন যথাক্রমে ৪১৫ জন ও ৮৮৪ জন। নিহতের তালিকায় ৫৮ নারী ও ৬২ শিশু রয়েছে।

এ ছাড়া মার্চে ৩৮৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ নারী, ৮২ শিশুসহ ৩৮৬ জন নিহত ও ৮২০ জন আহত হয়েছেন। এপ্রিলে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২৭টি। এতে ৩৪০ জন নিহত ও ৬১০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩৮ নারী ও ৫৩ শিশু রয়েছে। মে মাসে ২৯৭টি দুর্ঘটনায় ৪৭ নারী, ৪৪ শিশুসহ ৩৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এ সময়ে আহত হয়েছেন ৫০৪ জন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা কমেছে। তবে এক মাসের তথ্যে দুর্ঘটনা-পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা যাবে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য যে ১০টি প্রধান কারণ আগে চিহ্নিত করা হয়েছিল, সেগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে।

কারণগুলো হচ্ছে- চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো; দৈনিক-চুক্তিতে চালক, কন্ডাক্টর বা হেলপারের কাছে গাড়ি ভাড়া দেওয়া; অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ; সড়কে চলাচলে পথচারীদের অসতর্কতা; বিধি লঙ্ঘন করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং; দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো; ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব; জনবহুল এলাকাসহ দূরপাল্লার সড়কে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা; সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি ইঞ্জিনচালিত ক্ষুদ্রযানে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন।