৬ হাজার কেজি চালের দায় নিচ্ছে না কেউ!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ট্রাকভর্তি প্রায় ৬ হাজার কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে, যার দায় কেউ নিতে চাচ্ছে না। সেইসঙ্গে এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের নূরপুর সড়ক বাজার থেকে এসব চাল জব্দ করা হয়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, জব্দ হওয়া চালগুলো ভিজিএফের, যা গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছোয়াব আহমেদ ঈদের আগে অসহায় ও হতদরিদ্রদের মধ্যে কম করে বিতরণ করে জড়ো করেছেন।
তবে পুলিশ ও খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ বলছে, চালের বস্তায় সরকারি দপ্তরের কোনো মোহর নেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিরা হলেন- গোকর্ণ ইউপি চেয়ারম্যান ছোয়াব আহমেদের ভাতিজা মো. আলাউদ্দিন (৪৫), একই ইউনিয়নের পাঠানিশা গ্রামের জেরবাজ খাঁর ছেলে ট্রাকচালক মিজান মিয়া (৩৮) এবং নূরপুর গ্রামের বাসিন্দা ট্রাকচালকের সহযোগী মাসুক মিয়া (২২)।

গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে দুস্থদের সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিএফ) আওতায় ১ হাজার ৭৫০ জনের জন্য ২৪ টন চাল বরাদ্দ পায় এই ইউপি। উপকারভোগীদের প্রত্যেকে ১৫ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু চাল বিতরণের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক সংযুক্তকারী কর্মকর্তার উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইছাক মিয়া উপস্থিত ছিলেন না।

স্থানীয় হতদরিদ্ররা জানান, ঈদুল ফিতরের ভিজিএফের চাল বিতরণে চেয়ারম্যান ছোয়াব আহমেদ অনিয়ম করেছেন। ১৫ কেজি করে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা ৭ থেকে ১০ কেজি করে চাল পেয়েছেন।

ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য আলী জাহান বলেন, ‘ভিজিএফের চাল বিতরণের জন্য আমি ৯০ জন হতদরিদ্রের নাম দিয়েছিলাম। তারা চাল পেয়ে অভিযোগ করেছেন, ১৫ কেজির স্থলে তাদের ৭ থেকে ৮ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।’

নাসিরনগরের ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা সামিউল আলিম বলেন, ‘খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত কোনো বস্তা পাওয়া যায়নি। তাই এ নিয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না।’

এ বিষয়ে গোকর্ণ ইউপির চেয়ারম্যান ছোয়াব আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

নাসিরনগর থানার ওসি সাজেদুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা ট্রাকভর্তি ১৪৯ বস্তা চালসহ তিনজনকে আটক করেছি। ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার উপস্থিতিতে চালগুলো সরকারি কি না যাচাই করেছি। জব্দকৃত চাল সরকারি ভিজিএফের চাল নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। কারও কোনো অভিযোগ না থাকলে চালগুলো মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল কবির ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম জানান, চাল বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা তিনি এখনো জানতে পারেননি। তিনি বিস্তারিত জেনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।