ট্রেন দুর্ঘটনা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাত, শনাক্ত তিন

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাতে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন মনোয়ারা পারভীন (৪৮), ফাহমিদা আক্তার (২০) ও সানজিদা আক্তার। এছাড়া সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২৯ জনের সবাই শঙ্কামুক্ত রয়েছেন।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ট্রেন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহতের সংখ্যা শতাধিক। তবে স্থানীয়রা নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছেন।

উদ্ধার হওয়া সাতজনের লাশের মধ্যে তিনজন নারী ও চারজন পুরুষ বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিন নারীর পরিচয় তাদের স্বজনরা শনাক্ত করেছেন বলে আজ সকাল ৯টার দিকে নিশ্চিত করেন কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সনক কান্তি।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন

নিহতদের একজন মনোয়ারা, যিনি কুলাউড়া পৌরসভার টিটিডিসি এলাকার আব্দুল বারীর স্ত্রী। তিনি রোববার রাতে সিলেটে মেয়ের বাসা থেকে ট্রেনে করে কুলাউড়ায় নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। সাথে তার মেয়ে ও ভাগনিও ছিলেন। দুর্ঘটনায় ট্রেনের জানালার কাচ ভেঙে মাথা, মুখ ও বুকে আঘাত পান মনোয়ারা। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। সাথে থাকা মেয়ে ও ভাগনি আহত হন।

নিহত আরেক নারী ফাহমিদা সিলেটের মোগলাবাজার থানার আব্দুল্লাপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ নার্স ছিলেন। ফাহমিদার ভাই আব্দুল হামিদ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কুলাউড়া হাসপাতালে এসে বোনের লাশ শনাক্ত করেন। নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য সিলেট থেকে একটি দলের সাথে ঢাকা যাচ্ছিলেন ফাহমিদা।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন

নিহত আরেকজন নারীর নাম সানজিদা আক্কার। তার বাড়ি বাগেরহাট বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে সানজিদা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারেনি পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে নিহতের সংখ্যা চারজন বলে জানিয়েছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক। তাদের লাশ হাসপাতালে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ দুর্ঘটনায় ২৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন, যাদের সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি ২৯ জনের সবাই শঙ্কামুক্ত আছেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ।

রোববার রাত ১১টার পরে কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনের পাশে বনশাইলে আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ সময় সেতু ভেঙে ট্রেনটির সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর মধ্যে তিনটি বগি সেতু ভেঙে নদীতে এবং বাকি চারটি বগি সেতুর পাশে কাত হয়ে পড়ে। এর আগে রাত ১০টায় সিলেট স্টেশন থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।