একশ’ টাকার দ্বন্দ্বে চারজনের শরীর ঝাঁঝরা

মাত্র একশ’ টাকা নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যেই এক পক্ষ শটগান দিয়ে গুলি ছুঁড়ে। কিন্তু সেই গুলি প্রতিপক্ষকে আঘাত না করতে পারলেও একটি পরিবারের চার সদস্যের শরীর ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। শনিবার রাত ১১টায় ঢাকার যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া গোবিন্দপুর নূর মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রাতের খাবার খাওয়ার সময় বাইরে থেকে আসা শটগানের গুলিতে বাসার ভেতরে একই পরিবারের ৪ জনসহ পাঁচ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। শিশু দুটির চোখের মধ্যেও গুলি লেগেছে। এই চারজন ছাড়াও স্থানীয় এক ব্যবসায়ীও আহত হয়েছেন গুলিতে।

আহতরা হলেন টাইলস মিস্ত্রি হাফিজুল ইসলাম (২৪), তার ছোট ভাইয়ের বৌ সাথি (২০), ভাতিজি আবিদা (৫), ভাগিনা জুনায়েত (৪) এবং ওই এলাকার জাহিদুল ইসলাম এনায়েত (২৪)।

এ বিষয়ে গুলিবিদ্ধ হাফিজুলের ভাই আব্দুল্লাহ জানান, তার ভাইয়ের পরিবার গোবিন্দপুর এলাকার একটি তৃতীয় তলার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকেন। রাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেতে বসার পর হঠাৎ করেই ঘরের জানালা দিয়ে আসা বাইরের শটগানের গুলিতে আহত হন। পরে দ্রুত তাদের ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনার আগে বাসার পার্শ্ববর্তী একটি মাঠে গণ্ডগোল চলছিল বলে শুনেছি। সেখানকার চলা গুলি জানালা দিয়ে এসে পরিবারের থাকা চার সদস্যের গায়ে লাগেছে বলে ধারণা করছি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘লাইসেন্স করা শটগান দিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে বাসার ভেতরে থাকা কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তারা আশঙ্কামুক্ত।’

গুলির ঘটনায় এনায়েতের বড় ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে যাত্রাবাড়ি থানায় একটি মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন, মো. এরশাদুর রহমান হ্যাপি (৩৫), তার বাবা হাফিজ উদ্দিন (৬০) ও সাইফুল ইসলাম (৪০)। এই মামলায় আরও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মামলার এক নম্বর আসামি মো. এরশাদুর রহমান হ্যাপির চাচাত ভাই হৃদয়ের সঙ্গে স্থানীয় ইয়াছিন ও বাবুর একশ টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। ঝগড়া মিটমাটে স্থানীয় মোবারক হোসেন নামের একজনের কাছে বিচার দেন ইয়াছিন ও বাবু। কিন্তু এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন হ্যাপি। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে হ্যাপি তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে ইয়াছিন ও বাবুদের ওপর হামলা করেন। এ সময় তারা শটগান দিয়ে তাদের ওপর ছররা গুলি ছোঁড়ে। ওই গুলিই জানালা ভেদ করে আহতদের শরীরে লাগে।